রাজশাহী মহানগরীর অভিজাত আবাসিক হোটেল ‘নাইস ইন্টারন্যাশনাল’ থেকে উদ্ধার হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে খুন করা হয়েছে বলে প্রমাণ মিলেছে। 

তবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী ইতিহাসের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমানের বিষয়টি হত্যা না আত্মহত্যা এ নিয়ে এখনো দ্বিধার মধ্যে আছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) ফরেনসিক বিভাগ। তার রিপোর্ট কয়েকদিন পরে দেওয়া হবে জানিয়েছেন রামেক ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের ডা. এনামুল হক। 

এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে সুমাইয়া ও মিজানুরের লাশ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে লাশ দুইটি হস্তান্তর করা হয়েছে।

রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদত হোসেন খান জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, রাবি ছাত্র মিজানুর রহমান ও সুমাইয়া স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে হোটেলে ওঠে। এরপর তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের পর হত্যা করে। মিজান আত্মহত্যা করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কি কারণে হত্যাকাণ্ড এ বিষয়েও এখনো পুলিশ অন্ধকারে রয়েছে। 

মিজানুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে নাকি সে আত্মহত্যা করেছে বিষয়টি নিশ্চিত হতে আরও সময় লাগবে। তবে ছাত্রী সুমাইয়াকে শারীরিক সম্পর্কের পর হত্যা করা হয়েছে এটা অনেকটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। 

ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের ডা. এনামুল হক বলেন, শিক্ষার্থী সুমাইয়া নাসরিনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তার মাথায় ও মুখে জখমের চিহ্ন করেছে। অপরদিকে মিজানুর রহমান শ্বাসরোধ হয়ে মারা গেছেন। সে আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়।

প্রসঙ্গত, রাজশাহী নগরীর সাহেব বাজার এলাকায় অবস্থিত আবাসিক হোটেল নাইস ইন্টারন্যাশনালের ৩০৩ নম্বর কক্ষ থেকে শুক্রবার দুই শিক্ষার্থীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। এরমধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় ছাত্রী সুমাইয়ার লাশ খাটের ওপর বালিশ চাপা দেওয়া ছিলো। আর ছাত্র মিজানুরের দুই হাত বাধা অবস্থায় ঝুলানো ছিলো।

সুমাইয়া নাসরিন বগুড়া শহরের উপশহর এলাকার বাসিন্দা আবদুল করিমের মেয়ে। সে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলো। 

আর মিজানুর রহমান সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার পাঠানপাড়া গ্রামের উমেদ আলীর ছেলে। সে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তাদের মধ্যে আগে থেকেই প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।