- হোম
- >
- মুক্তিযুদ্ধ
- >
- সাতক্ষীরা পারকুমিরা গণহত্যা দিবস আজ
সাতক্ষীরা পারকুমিরা গণহত্যা দিবস আজ
ইতিহাসের এক নিষ্ঠুর নির্মমতার নাম সাতক্ষীরার পার কুমিরা গণহত্যা। ১৯৭১ সালের ২৩ এপ্রিল পাটকেলঘাটার সন্নিকটে পারকুমিরায় রাজাকারদের সহায়তায় পাক হানাদাররা ৭৯ জন নিরীহ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
যাদের পরিচয় পাওয়া গিয়েছিল সেই শহীদদের মধ্যে ছিলো পাটকেলঘাটা থানার পুটিয়াখালী গ্রামের শেখ আব্দুর রহমান, শেখ আলাউদ্দীন, শেখ সামছুর রহমান, শেখ বদরুদ্দীন, সালমত আলী, শেখ ফয়জুল ইসলাম, আজিজুর রহমান, সাজ্জাত আলী, বেলায়েত আলী, শামছুর রহমান, আজিজুর রহমান, আব্দুস সামাদ, কাশীপুর গ্রামের শেখ হায়দার আলী, তৈলকূপী গ্রামের আব্দুর রউফ, পারকুমিরা গ্রামের বিজয় পাল, কলাগাছির কার্ত্তিক মন্ডল, পারকুমিরার ষষ্ঠি কুন্ডু ও বিজয় পাল।
এর মধ্যে ৪৯ জনের লাশ পারকুমিরার বধ্যভূমিতে মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়। কাশীপুর গ্রামের শেখ হায়দার আলীকে পাকসেনারা জড়িয়ে আগুণ দিয়ে পুড়িয়ে মারে।
শহীদ পরিবারের সন্তান তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নুরুল ইসলাম সেই হত্যাযজ্ঞের লোমহর্ষক কাহিনী বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, সেদিন ছিল শুক্রবার। মসজিদে জুম্মার আযান হচ্ছিল। এ সময় তালার পাটকেলঘাটা থেকে পাকিস্তানি হায়েনারা পারকুমিরায় গিয়ে নিরীহ গ্রামবাসীকে আলোচনার কথা বলে একত্রিত করে। এ সময় সহজ সরল গ্রামবাসী সেখানে উপস্থিত হলে তাদের ওপর ব্রাশ ফায়ার করলে ঘটনাস্থলেই ৭৯ জন নিহত হয়।
যাদের পরিচয় পাওয়া যায় তাদের অনেককেই পরে পারিবারিকভাবে দাফন করা হয়। যাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি তাদেরকে পারকুমিরার ওই বধ্যভূমিতে গণকবর দেওয়া হয়। বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর সেই বীর শহীদদের গণকবর রক্ষার্থে সরকারি পদক্ষেপ গ্রহণ করে। ইতিমধ্যে উক্ত স্থানে মাটি ভরাটের কাজ হয়েছে।
শহীদদের স্মৃতি চারণে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল ১০টায় শহীদদের গণকবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়েছে।
শহীদ পরিবারের সন্তান কাশীপুর গ্রামের শেখ টিপু সুলতান আক্ষেপ করে বলেন, স্বাধীনতার ৪৩ বছর অতিবাহিত হয়েছে। অনেক সরকার ক্ষমতায় এসেছেন। কিন্তু শহীদ স্মৃতি স্তম্ভটি আজও নির্মিত হয়নি।
তিনি আরো বলেন, শহীদ পরিবারের লোকজন কেমন আছে এ খবরও কেউ কোনো দিন নেয়নি। তিনি বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন জানিয়ে বলেন অবিলম্বে শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে পারকুমিরায় একটি স্মৃতি স্তম্ভ স্থাপন এবং গণকবর সংরক্ষণ করা হোক।
প্রসঙ্গত, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯২ সালে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী থাকাকালে কাশীপুর সফরকালে আশ্বাস প্রদান করেছিলেন, পারকুমিরা স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হবে। প্রধানমন্ত্রীর সেই আশ্বাস আজোও বাস্তবায়িত হয়নি।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।