রাবি শিক্ষক হত্যা: গ্রামের বাড়িতে শোকের মাতম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক এ কে এম রেজাউল করিমের মৃত্যুর খবরে তার গ্রামের বাড়ি রাজশাহী জেলার বাগমারার দরগামাড়িয়া গ্রামের চলছে শোকের মাতম। ঘটনার পরপরই বিষয়টি গনমাধ্যমে প্রচার হলে তাঁর গ্রামসহ ওই এলাকায় শোকের মাতম নেমে আসে।
আজ শনিবার দুপুরে সরেজমিনে তার গ্রামের বাড়ি ভবানীগঞ্জ পৌরসভার দরগামাড়িয়া গ্রামে গেলে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। ছেলের মৃত্যুর খবরে বাবা আবুল কাশেম জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। নিহত রেজাউল করিমের মাসহ প্রতিবেশী মহিলারা আবুল কাশেমের মাথায় পানি ঢালতে দেখা গেছে। তার মা মর্জিনা বেগম ছেলের মৃত্যুকে কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না।
তিনি বার বার প্রলাপ করে বলছেন, ‘আমার ছেলে কোন দিন কারো ক্ষতি করেনি, এমন ছেলে কারো ক্ষতি করতে পারে না।’
জীবনে কোন দিনই তার ছেলে-মেয়েদের বেয়াদবী দেখেননি এই পিতা। ছেলে-মেয়েরা চাকরীর সুবাদে সবাই বাগমারার বাহিরে অবস্থান করেন বলেও তিনি বার বার মুর্ছা করছিলেন। তিনি সৃষ্টিকর্তার কাছে হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের জন্য প্রার্থনা করেছেন।
উল্লেখ্য, আজ শনিবার সকাল ৭.৩০ মিনিটে দিকে নিজ বাসা মহানগরীর শালবাগান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় যাওয়ার জন্য বের হয়ে বটতলায় বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক এ কে এম রেজাউল করিম। এমন সময় হেলমেট পরা মোটরসাইকেল আরোহী দুই যুবক শিক্ষক এ কে এম রেজাউল করিমের গলায় কোপ দিয়ে পালিয়ে যায়। কোপ মারার সাথে শিক্ষক রেজাউল করিম মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর খবরটি ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় প্রচার করলে তার গ্রামের বাড়ির লোকজন জানতে পারে এবং সাথে সাথে তার বাবা আবুল কাশেম জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
নিহত শিক্ষক আবুল কাশেমেরা পাঁচ ভাই-বোনদের মধ্যে তিনি সকলের বড় ছিলেন। বাবা আবুল কাশেম প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জেলা শিক্ষা অফিসার পদে চাকরি করতেন। তিনি চাকরি থেকে অবসরে গেছেন। রেজাউল করিম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের প্রভাষক পদে যোগদান করেন। তার ছোট ভাই সাজেদুল করিম সেলিম নাটোরের সিংড়া উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপার ভাইজার পদে কর্মরত আছেন। তিন বোনের মধ্যে দুই বোন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে রাজশাহী শহরে কর্মরত আছেন। রেজাউল করিমের মৃত্যুর কারণ কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না বাগমারার মানুষ। তার মৃত্যুতে বাগমারায় এখন সর্বত্রেই চলছে শোকের মাতম।
এলাকার প্রতিবেশীরা জানান, তার পরিবারের সদস্যরা প্রকাশ্যে কোন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত নন। অথচ কি কারণে এমন সহজ সরল শিক্ষককে দুর্বৃত্তরা নিশংস ভাবে হত্যা করল প্রশ্ন এলাকাবাসীর। এলাকার লোকজন নিহত রেজাউল করিমের খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।