মৃত্যুর ১০ দিন পর মামলা!
অবশেষে মৃত্যুর ১০ দিন পরে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করায় স্বামীসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন নিহত আল্পনা খাতুন আঁখির পিতা আনিছুর রহমান। ১৮ এপ্রিল (সোমবার) সকালে আঁখির পিতা আনিছুর রহমান রাজশাহীর চারঘাট মডেল থানায় নিহত আঁখির স্বামী রাজিব, শ্বশুর ইসরাইল হোসেনসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি দায়ের করেছেন।
থানায় দায়েরকৃত মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, চারঘাট উপজেলার ভায়ালক্ষিপুর ইউনিয়নের ডাকরা বাবুরচক গ্রামের ইসরাইল হোসেনের ছেলে রাজিবের সাথে গত ২ বছর পূর্বে নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলার বাশবাড়িয়া গ্রামের আনিছুর রহমানের মেয়ের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে আঁখির স্বামী রাজিব, শ্বশুর ইসরাইল হোসেনসহ পরিবারের লোকজন ১ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিল। কিন্তু রাজিব ও তার পরিবারের দাবিকৃত টাকা আঁখি দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে মাঝে মধ্যেই রাজিব ও তার পরিবারের সদস্যরা আঁখির উপর শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন করে আসছিল। এরই প্রেক্ষিতে গত ৮ এপ্রিল সকালে মোবাইল ফোনে স্থানীয়দের মাধ্যমে আঁখির পরিবার সংবাদ পায় আঁখি গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
এমন সংবাদ পেয়ে নিহত আঁখির পিতা আানিছুর রহমানসহ পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে এসে দেখতে পান আঁখির মাথায় শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়াও রাজিবসহ পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে যাওয়া এবং আঁখির শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেয়ে আঁখির পরিবারের সন্দেহ হয় আঁখির স্বামী রাজিবসহ তার পরিবারের সদস্যরা আঁখিকে মারপিট করে হত্যা করে পরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করেছে। এমন সন্দেহের কারণে অবশেষে আঁখির মৃত্যুর ১০ দিন পরে আঁখির পিতা আনিছুর রহমান সোমবার সকালে চারঘাট মডেল থানায় হাজির হয়ে আঁখির স্বামী রাজিব, শ্বশুর ইসরাইল হোসেন, শাশুড়ী পারুল, ননদ রোকিয়া বেগম, ননদের স্বামী রবিউল, চাচা শ্বশুর জাকির হোসেন, চাচাত দেবর শাকিল হোসেন ও বাবুকে আসামি করে করে চারঘাট মডেল থানায় আত্মহত্যা করতে বাধ্য করার অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
এ ব্যাপারে চারঘাট মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নিবারণ চন্দ্র বর্মন বলেন, আঁখির শরীরে আঘাতের চিহ্ন থাকলেও সেই আঘাতে আঁখির মৃত্যুর কারণ নয় বলে ময়না তদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে। তবে আঁখিকে শারীরিক নির্যাতন ও মারপিট করে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে প্রাথমিক তদন্তে এমন সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে আসামিরা সকলেই পলাতক থাকায় তাদের আটক করা সম্ভব হয়নি। দ্রুত সময়ে আসামিদের আটক করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।