নড়াইলে বৈশাখী মেলায় ঘোড়দৌড়!
সেই আকবরি আমল থেকে নবগঙ্গা নদীর পাড়ে বাঙ্গালি জাতির প্রাণের সাড়া জাগানো বাংলা নববর্ষ হয়ে আসছে ব্রাহ্মণডাঙ্গার ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ আড়ং। এ এক মহামিলনের অকৃতিম প্রেম ভালবাসার পূর্ণভূমি।
নতুন বছরকে বরণ করতে নড়াইলের ব্রাহ্মণডাঙ্গায় পহেলা বৈশাখে এ আড়ংকে ঘিরে ঐতিহ্যবাহী ঘোড়াদৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। মেলাকে ঘিরে প্রতিবছর ঐ এলাকায় এক মহামিলনে রূপ নেয়। নবগঙ্গা নদীর এপার-উপারের প্রতিটি গ্রামে গ্রামে বাড়িতে কুম্বের ঘ্রাণ পাওয়া যায়। ভাল মন্দ খাবারের আয়োজন করা হয়। এ যেন চিরায়ত বাঙালির সংস্কৃতি চর্চা।
যদিও বাড়তি আমেজে ভরপুর হয়ে উঠে মেলার মূল আয়োজনের চারটি গ্রাম। তাদের দায়িত্বও বেশি থাকে। সফলতা ও ব্যর্থতাও তাদের বেশিরভাগ বহন করতে হয়।
এ বছর ঘোড়াদৌড় প্রতিযোগিতায় নড়াইল, মাগুরা, যশোরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ২৫টি ঘোড়া অংশ নেয়। পয়েন্টভিত্তিক এই প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকারী ঘোড়ার মালিক নড়াইল সদর উপজেলার হৈদের খোলার শান্ত মিনাকে ছয় হাজার টাকা, দ্বিতীয় স্থান অধিকারী যশোরের অভয়নগরের ঘোড়ার মালিক জসিম মোল্যাকে ৪ হাজার টাকা এবং তৃতীয় স্থান অধিকারী লোহাগড়া উপজেলার নওখোলা গ্রামের ঘোড়ার মালিক ফাঁরুক খানকে ২ হাজার টাকা এবং অংশগ্রহণকারী সকল ঘোড়ার মালিককে সান্তনা পুরস্কার দেওয়া হয়।
মেলার অন্যতম আকর্ষণ দলিত সম্প্রদায়ের তৈরী বাঁশ বেতের কুলা, ডুলা, চালন, ধামা, খুচি, পালা। প্রতিবছর এ ধরনের মালামাল মেলায় নিয়ে আসে নবগঙ্গার পারের ফেদীগ্রামের দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ। এছাড়া দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজারো দোকানি কুঠির শিল্প, হস্তশিল্প, কামার-কুমর শিল্প, বাঁশ বেত ও কাঠের জিনিসপত্র দিয়ে মেলার বাঙালিয়ানার ঐতিহ্য তৈরী করেন।
মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এসএম শারফুজ্জামান জানান, এলাকাবাসীর আর্থিক সহযোগিতায় এ মেলার আয়োজন করা হলেও অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে মেলা চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে কয়েকশত বছরের ঐতিহ্যবাহী এই মেলা ধরে রাখা সম্ভব। এজন্য তিনি সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।
১৪ ও ১৫ এপ্রিল দুদিন জুড়ে এই মেলায় ঐহিত্যবাহী লাঠিখেলা, হাড়িভাঙ্গা, ঘুড়ি ওড়ানো, দড়ি টানা, সাইক্লিং, সাতারসহ গ্রামীণ খেলাধুলা, জারিগানসহ বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।