চট্টগ্রাম আ.লীগ কার্যালয়ে ভাঙচুর
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রকাশ : ১৫ এপ্রিল, ২০১৬
প্রিন্টঅঅ-অ+
চট্টগ্রাম নগরের আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ নেতা কর্মীরা। তৃণমূল নেতাদের বাছাই করা প্রার্থী তালিকা বাদ দিয়ে ‘একতরফা’ ভাবে নতুন করে প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য সাক্ষাৎকার ডাকার প্রতিবাদে এই ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
শুক্রবার বেলা ১১টায় লালদীঘি পাড়ে দক্ষিণ জেলা দলের কার্যালয়ে এঘটনা ঘটে।
এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিপেটা, টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছোঁড়ে। এ ঘটনায় পুলিশের দুজন সদস্যও সামান্য কয়েকজন আহত হয়েছেন।
বিক্ষুব্ধ নেতা কর্মীরা জানান, আগামী ৪ জুন চট্টগ্রামের আনোয়ারা ও কর্ণফুলী থানার ১৬ ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই দুই থানা ও থানার ১৬ ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মতামত নিয়ে প্রার্থী ঠিক করে গত বুধবার কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডে পাঠানো হয়। এই তালিকা পাঠানোর পর মনোনয়ন বঞ্চিতদের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে এই দুই থানার প্রার্থী বাছাইয়ের ঘোষণা দেয় দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ শুক্রবার সকালে আনোয়ারার ১১ ইউনিয়নের প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য সাক্ষাৎকারের সময়সূচি ছিল। বিষয়টি জানতে পেরে দুই থানা থেকে সকালে কয়েকশ নেতা কর্মী নগরে অবস্থিত দক্ষিণ জেলা কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিক্ষুব্ধ নেতা কর্মীরা মিছিল নিয়ে কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশের বাধা ডিঙিয়ে কিছু নেতা কর্মী ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। এ সময় পুলিশ লাঠিপেটা, টিয়ালসেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে নেতা কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় ।
ঘটনাস্থলে থাকা মোঃ রাসেল নামে একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, সকাল ১১টার কিছু আগে দুই শতাধিক নেতা কর্মী মিছিল নিয়ে অফিসে ঢোকে। এ সময় পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে অনেকে কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। রাসেল বলেন, ‘ভয়ে অফিসে থাকা আমরা দুজন পেছনের দরজা দিয়ে বের হয়ে যাই। এরপর এসে দেখি চেয়ার ভাঙচুর করা হয়েছে। কার্যালয়ের আয়নাও ভাঙা হয়েছে।’
ভাঙচুরের ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ নেতা কর্মীরা চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করেন। এই বিক্ষোভের আনোয়ারা উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী নেতৃত্ব দেন । তিনি ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। সমাবেশে নেতা কর্মীরা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে একতরফা প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়ার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এবিষয়ে তৌহিদুল হক বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশনা মেনে তৃণমূলের মতামত নিয়ে দুই থানার ১৬ ইউনিয়নের প্রার্থী বাছাই করে গত বুধবার কেন্দ্রে পাঠান ভূমি প্রতিমন্ত্রী। অনুলিপি দেওয়া হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের কাছেও। কিন্তু জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মনোনয়ন বঞ্চিতের ডেকে প্রার্থী বাছাইয়ে সাক্ষাৎকারের ঘোষণা দেন। এর প্রতিবাদে আমরা হাজারখানেক নেতা কর্মী মিছিল নিয়ে যাই। এ সময় মিছিলে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে গুটিকয়েক লোক। এ কারণে নেতা কর্মীদের কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করে থাকতে পারে।’
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, মনোনয়ন বোর্ডকে উপেক্ষা করে ভূমি প্রতিমন্ত্রী কেন্দ্রে প্রার্থী তালিকা পাঠিয়েছেন। কর্ণফুলী থানার পাঁচ ইউনিয়নের পর গতকাল আনোয়ারা ও বাঁশখালীর প্রার্থী বাছাইয়ের সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময়সূচি ছিল। তবে তা স্থগিত করা হয়। এর মধ্যেই তারা এসে দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। তিনি বলেন, এরপরও গতকাল সকালে আনোয়ারার কিছু সংখ্যক প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে দক্ষিণ জেলা সভাপতির লালখানবাজারের বাসভবনে। তবে জেলা থেকে আনোয়ারা ও কর্ণফুলীর প্রার্থী তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হয়নি।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জসীম উদ্দিন বলেন, মনোনয়ন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে নেতা কর্মীরা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা চালালে পুলিশ বাধা দেয়। তারা পুলিশের ওপর চড়াও হয়। এ সময় লাঠিপেটা, টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এ ঘটনায় পুলিশের দুজন সদস্য সামান্য আহত হয়। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হবে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।