আজ ১৩ এপ্রিল, চারঘাট থানাপাড়া গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে পাক হানাদার বাহিনী অতর্কিত চারঘাট আক্রমণ করে মুক্তিযোদ্ধাসহ দুই শতাধিক নিরীহ মানুষকে নৃসংশভাবে হত্যা করে। রাজশাহী জেলার প্রায় ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে পদ্মা বড়াল নদী বিধৌত চারঘাট উপজেলা। চারঘাট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ছিল তৎকালীন চারঘাট থানার মুক্তিযোদ্ধাদের মূল ক্যাম্প।

সেদিন দুপুর ১২টার দিকে চারঘাট বাজারের পূর্ব ও উত্তর দিক দিয়ে পাক বাহিনী ২০/২৫টি গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করে। এ সময় আনসার, পুলিশ, ইপিআরসহ মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিরোধের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পাক বাহিনী চারঘাট বাজার ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বৃষ্টির মতো গুলিবর্ষণ করলে শতাধিক ব্যক্তি নিহত হন। এরপর তারা সারদা পুলিশ একাডেমিতে গিয়ে অবস্থান নেয়।

এদিকে প্রাণভয়ে চারঘাট বাজার থেকে অর্ধকিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম দিকে এবং সারদা একাডেমি সংলগ্ন থানাপাড়ার সহস্রাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু ঘর-বাড়ি ছেড়ে পদ্মারপাড়ে গিয়ে জড়ো হয়। কিন্তু পাক সেনারা গিয়ে তাদের ঘিরে ফেলে।

হানাদার বাহিনী সমবেত জনতার মধ্য থেকে নারী ও শিশুদের বের করে দিয়ে পুরুষদের কয়েকটি লাইনে সারিবদ্ধ হওয়ার নির্দেশ দেয়। নিশ্চিত মৃত্যুর কথা বুঝতে পেরে সবাই আল্লাহর নাম নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে যায়।

এরপরই মেশিনগান গর্জে উঠে। নিহত হন তিন শতাধিক মানুষ। সকলের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার জন্য হায়েনাদের দল লাশের স্তুপে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।

সারদা পুলিশ একাডেমির দক্ষিণ প্রান্তে গণকবর রয়েছে।