আ. লীগের সংঘর্ষে মুন্সীগঞ্জ রণক্ষেত্র: আহত ৭
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রকাশ : ১২ এপ্রিল, ২০১৬
প্রিন্টঅঅ-অ+
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচনী প্রচারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষে কমপক্ষে সাতজন আহত হয়েছে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে কয়েকটি গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটে।
ইটপাটকেল নিক্ষেপ, সড়ক অবরোধ ও ভাঙচুরের ঘটনায় পুরো শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ আহাম্মেদ পাভেল, জেলা তরুণ লীগের সভাপতি মৃদুল দেওয়ান, স্থানীয় আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাসের ভাতিজা আদর দাস, পলাশ, রিয়াদ, বাদল ও দুলাল।
আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, পঞ্চসার ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন আবদুস সাত্তার। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন সুতা ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফা। আবদুস সাত্তার আজ বেলা ১২টার দিকে ছাত্রলীগ নেতা পাভেল, তরুণ লীগ নেতা মৃদুলসহ অন্যদের নিয়ে মুক্তারপুরে গোলাম মোস্তফার কিং ফিশার নিটিং কারখানায় যান।
গোলাম মোস্তফা দাবি করেন, ‘ছাত্রলীগ নেতা পাভেল, তরুণ লীগ নেতা মৃদুলসহ অন্য নেতাকর্মীরা কারখানার কার্যালয়ে এসে আমাকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর হুমকি দেয়। নির্বাচন করব জানালে মৃদুল পিস্তল ধরে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। কয়েকটি গুলিও ছোড়ে। ভাগ্যক্রমে আমি বেঁচে যাই। ওই সময় তারা গণপিটুনির শিকার হয়। পরে তাদের আটকে রেখে পুলিশে খবর দেই।’
তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গোলাম মোস্তফার কারখানার কর্মীরা তরুণ লীগ নেতা মৃদুল দেওয়ান, ছাত্রলীগ নেতা ফয়েজ আহাম্মেদ পাভেল, পলাশ ও সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাসের ভাতিজা আদর দাসকে কারখানার ভেতরে নিয়ে বেধড়ক পেটান। পরে পুলিশ এসে তাঁদের গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় জেলা তরুণ লীগের সভাপতি মৃদুল দেওয়ানকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো করা হয়।
এ ঘটনায় টঙ্গিবাড়ী-সিপাহীপাড়া সড়কে আবদুস সাত্তারের সমর্থকরা অবরোধ করে ও গাড়ি ভাঙচুর চালায়। সোয়া ২টার দিকে র্যাব সদস্যরা লাঠিপেটা করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেন এবং সড়ক অবরোধমুক্ত করেন।
এদিকে বেলা আড়াইটার দিকে উত্তেজনার ধারাবাহিকতায় শহরের জুবলি রোডে দুই পক্ষের মধ্যে গুলিবিনিময়, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও দোকানপাট ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ সময় অন্তত ৩০টি গুলি ছোড়া হয় ও বাংলালিংক সেন্টার ভাঙচুর করা হয়। আধা ঘণ্টা পর পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুস সাত্তার বলেন, ‘মুক্তারপুর এলাকায় ভোট চাইতে গেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম মোস্তফার লোকজন বাধা দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং আমাদের চারজনকে ধরে নিয়ে যায়। গোলাম মোস্তফার নিটিং ফ্যাক্টরি কিং ফিশারে নিয়ে বেদম প্রহার করে। পরে পুলিশ উদ্ধার করে।’
আবদুস সাত্তার বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়, অথচ আওয়ামী লীগের লোকজনকে আটকে পিটিয়েছে।’
এসব ঘটনায় সদর উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
অন্যদিকে মৃদুল দেওয়ান আহত হওয়ার ঘটনায় বেলা সাড়ে ৩টায় গজারিয়া উপজেলায় ভবের চর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
সূত্র: এনটিভি অনলাইন
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।