- হোম
- >
- বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
- >
- সর্বকালের ভয়ঙ্কর ১০ কম্পিউটার ভাইরাস
সর্বকালের ভয়ঙ্কর ১০ কম্পিউটার ভাইরাস
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রকাশ : ০৩ এপ্রিল, ২০১৬
প্রিন্টঅঅ-অ+
ভাইরাসে আক্রান্ত হননি এমন ব্যবহারকারী খুঁজে পাওয়া কঠিন। এক সময় ভাইরাস আক্রমণের কারণে এক রাতেই হাজার হাজার,মিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়ে যেত। সেই সময়ে প্রকাশিত কিছু ভাইরাস যা বিশ্বব্যাপী কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের এখনো ভাইরাস আক্রমণের ভয়াবহতার কথা মনে করে দেয়।
ভয়ঙ্কর ভাইরাস মেলওয়্যার ও ট্রোজানের চেয়ে শতগুন বেশী ভয়ঙ্কর এরা। বাড়ির ছাপোষা কম্পিউটার থেকে হোয়াইট হাউজের সুপার কম্পিউটার— কেউই এই সব ভাইরাসের হাত থেকে রেহাই পায়নি। এক নজরে দেখে নিন সেই সব ভাইরাসের তালিকা।
ব্রেইন (১৯৮৬) : মানুষের সবকিছু যেমন চলে মস্তিষ্ক তেমনি কম্পিউটার ভাইরাসের যাত্রাও শুরু হয়েছে ব্রেইন নামক ভাইরাস থেকে। ১৯৮৬ সালে আবিষ্কৃত এ ব্রেইনই প্রথম কম্পিউটার ভাইরাস। এটি সরাসরি কম্পিউটারে কোনো ক্ষতিকর আক্রমণ পরিচালনা করে না। কিন্তু পিসিকে আক্রমণ করার উপযোগী করে গড়ে তোলে। কেননা এ ভাইরাস অন্যান্য ক্ষতিকারক সফটওয়্যারগুলোকে পিসিতে প্রবেশের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে দেয়। এটি মূলত অপারেটিং সিস্টেমের দুর্বল দিকগুলো অন্যদের কাছে উন্মুক্ত করে দেয়। ওই সময়ে কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের কাছে তাৎক্ষণিকভাবে তেমন আতঙ্কের কারণ না হলেও পরবর্তীকালে দ্রুত বাড়তে থাকে কম্পিউটার ভাইরাসের আনাগোনা। এতে লক্ষাধিক ভাইরাস তৈরিকারক নতুন নতুন ভাইরাস তৈরিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
মিশেল অ্যাঞ্জেলো (১৯৯১) : এমএস ডসভিত্তিক কম্পিউটারের জন্য সর্বকালের সবচেয়ে ক্ষতিকারক ভাইরাসটির নাম মিশেল অ্যাঞ্জেলো। এটি হার্ডড্রাইভের বুটসেক্টর এবং যে কোনো ফ্লপি বা পেনড্রাইভ পিসিতে ইনসার্ট করার সঙ্গে সঙ্গে আক্রমণ করবে। আর ভাইরাসটির সবচেয়ে বড় খারাপ দিক হচ্ছে এর কল্পনার চেয়েও দ্রুত ছড়ানোর ক্ষমতা। ১৯৯১ সালে প্রথম যখন ছড়ায় তখন প্রায় মাসখানেকের মতো নীরবে কাজ করার পর মার্চের ৬ তারিখে ভয়ঙ্কররূপে কার্যকর হয় এবং প্রায় ১০ লাখেরও বেশি কম্পিউটারে ডাটা ধ্বংস করে ফেলে। তাই পুরো কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা এখনো এর নাম শুনলে আঁতকে উঠতে বাধ্য হন।
মেলিসা (১৯৯৯) : ম্যাসেজিং ব্যবস্থাকে পুরো ধ্বংস করার এক কার্যকরী ভাইরাসের নাম মেলিসা। ১৯৯৯ সালে যখন কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা ইন্টারনেট ব্যবহারের দিকে যাচ্ছে তখন এ ভাইরাসের আগমন। এটি পুরো ই-মেইল সিস্টেমে একটি হযবরল অবস্থা তৈরি করে। যার ফলে নেটওয়ার্কে থাকা কম্পিউটারগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে একে অপরটির কাছে হাজারো মেসেজ পাঠাতে শুরু করে। এতে এক সময় পুরো নেটওয়ার্ক ব্যবস্থায় বন্ধ হয়ে যেতে বাধ্য হয়। এ ভাইরাসটির জনককে খুঁজে বের করা হয় এবং ২০ মাসের জেল দেয়া হয়।
আই লাভ ইউ (২০০০) : কী সুন্দর নাম! অথচ এর প্রভাব কতটা ভয়ানক তা টের পাওয়া গিয়েছিল ২০০০ সালে। প্রথম দেখা গিয়েছিল ফিলিপিন্সে। নিমেষের মধ্যে বিশ্বের মোট কম্পিউটারের ১০ শতাংশ একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছিল। মোট ক্ষতির পরিমাণ ছিল ৫০০ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি।
মাইডুম (২০০৪) : ইতিহাসে এর থেকে ভয়ঙ্কর ভাইরাস নাকি জন্মায়নি! প্রথমবার দেখা গিয়েছিল ২০০৪ সালে ২৬ জানুয়ারি। ই-মেইলের মাধ্যমে যে কয়টি ভাইরাস ছড়িয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত ক্ষতিসম্পাদন করেছে মাইডুম ভাইরাসটি। এটা কম্পিউটারকে আক্রমণ করে এবং একাধিক জাঙ্ক ই-মেইল প্রেরণ করে। এর অন্য একটি নামও রয়েছে, Novarg. প্রায় ২০ লক্ষ কম্পিউটার এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বিশ্ব জুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়ে গিয়েছিল। এর ফলে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩ হাজার ৮০০ কোটি মার্কিন ডলার।
মেলিসা (১৯৯৯) : অন্যতম সাঙ্ঘাতিক তাতে কোনও সন্দেহ নেই। ১৯৯৯ সালে ২৬ মার্চ প্রথম লক্ষ্য করা যায়। প্রথম মাস-মেইলার মাইক্রোভাইরাস। খুব কম সময়ের মধ্যে ৬০ কোটি মার্কিন ডলার ক্ষতি করেছিল এটি। FBI এর সৃষ্টিকর্তা ডেভিড স্মিথ-কে ধরার জন্য আকাশ-পাতাল এক করে ফেলেছিল।
কোড রেড (২০০১) : এটা হচ্ছে আকস্মিক ব্লেন্ডেড থ্রেট অ্যাটাক। কম্পিউটারে ওয়েবসার্ভিস চালু থাকা কম্পিউটারগুলো কোড রেড আক্রমণ করে। এ ভাইরাসটি কোনো ওয়েবসাইটে নিজেকে আশ্রয় করে আইপি অ্যাড্রেসের মাধ্যমে পিসিতে আক্রমণ শুরু করে।
স্টর্ম (২০০৭) : ২০০৭-এ বিশ্বের প্রচুর কম্পিউটার ব্যবহারকারী একটি মেইল পেয়েছিলেন। ওতে লেখা ছিল ইউরোপে ঝড়ের কারণে ২৩০ জন মারা গিয়েছেন। যারা এই মেইলটি ক্লিক করে খুলেছিলেন, তাদের কম্পিউটার আর ঠিক করা যায়নি। এক কোটি কম্পিউটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বিশ্ব জুড়ে। ক্ষতির হিসাব করা যায়নি।
কনফ্লিকার: ২০০৯-এ আবিষ্কার হয় এটি। দেড় কোটি উইন্ডোজ সিস্টেমের বারোটা বাজিয়েছিল এটি। শুধুমাত্র কম্পিউটারই নয়, পেন ড্রাইভ, স্মার্টফোন, এক্সটার্নাল হার্ডডিস্ক সব কিছুর মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে এটি। ফায়ারওয়াল প্রোটেকশন ভলো না হলে কম্পিউটারের যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিমেষে কপি করে ফেলতে ওস্তাদ।
নিমডা: অ্যাডমিট কথাটি উল্টো করে লিখলে এই ভাইরাসটি দেখতে পাবেন। ৯/১১-এর এক সপ্তাহ পরে এই ভাইরাসটি বিশ্ব জুড়ে মাত্র ২২ মিনিটের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। কম্পিউটারের যাবতীয় তথ্য, ফাইল ট্রান্সফার এবং শেয়ার্ড ফোল্ডারের ইতিহাস নিমেষে চুরি করে ফেলতে পারে এটি। অনেকে বিশ্বাস করেন, এটি সাইবার টেরর অ্যাটাকেরই একটা অঙ্গ হিসাবে কাজ করেছিল।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।