মাদারীপুরে নির্বাচনী প্রচারণায় সক্রিয় নারীরা
বিগত যে কোন সময়ের যে কোন নির্বাচনের চেয়ে এবার মাদারীপুরে ইউপি নির্বাচনে নারীদের সক্রিয় অংশ গ্রহণ চোখে পড়ার মত। প্রচার-প্রচারণায় বাড়ি বাড়ি যাওয়া ছাড়াও সভা-সমাবেশ ও মিছিলেও অংশগ্রহণ করছেন নারীরা। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নারীদের এমন অংশ গ্রহণের নারীদের অগ্রগতির দিকই নির্দেশ করে। তবে নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা নেমে কয়েকটি ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষের হাতে নির্যাতন, মারধর ও হামলারও শিকার হয়েছেন। তবে তারা দমে না গিয়ে পছন্দের প্রার্থীর সঙ্গে একনিষ্ঠ সমর্থক হয়ে নির্বাচনী কাজ করে চলছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মাদারীপুর শহরের রাস্তি ইউনিয়নে বৃহস্পতিবার বিকেলে ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী বিল্লাল হোসেন মোল্লার পক্ষে প্রচারণায় নেমে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হন নারীরা। এ ঘটনায় দুইজন আহত হন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় ছবুল হাওলাদারের স্ত্রী রোজিনা বেগমকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ করেন ওই স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী সমর্থক নারীরা।
পূর্ব রস্তি এলাকার আছিয়া, মনোয়ারা, জাহানারা, নূপুর, সাদিয়াসহ অন্যরা ওই দিনই বিক্ষোভ মিছিল করে প্রশাসনের কাছে হামলার উপযুক্ত বিচার চান।
রাস্তি ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী বিল্লাল হোসেন মোল্লা বলেন, এলাকার নারীরা যোগ্য প্রার্থী হিসেবে নিজেদের উদ্যোগে প্রচারণা নামায় আমার প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ প্রার্থীর লোকজন তাদের উপর হামলা চালায়।
অপরদিকে, যার কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে নারীদের উপর হামলার অভিযোগ সেই প্রার্থী রাজু হাওলাদারকে দেখা গেল বৃহস্পতিবার বিকেলেই গণসংযোগ করছেন ইউনিয়নের অপর একটি স্থানে। সেখানেও সমাবেশের বেশির ভাগই নারী।
ওসব নারীরা জানান, তারা এবার পরুষদের পাশাপাশি প্রচার-প্রচারণায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছেন। আর পুরুষ কর্মী-সমর্থকদের হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী রাজু হাওলাদার।
এদিকে গত এক সপ্তাহ আগে ঘটমাঝি ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে প্রচার-প্রচারণা ও নির্বাচনী সহিংসতার শিকার হয়েছেন বেশ কয়েকজন নারী। দুজনের হাতও ভেঙ্গেছে প্রতিপক্ষের হামলায়। এসব ঘটনায় বিচার চান সংশ্লিষ্টরা।
ঘটমাঝি ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী খলিলুর রহমান দর্জী অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনী প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা আমার পক্ষের দুইজন নারীসহ ৫ জনকে ধারালো অস্ত্র ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। এক নারীর হাত ভেঙ্গেছে, অপর নারীর বুক ও পাঁজরে আঘাত পেয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন বলেন, নারী-পুরুষের ব্যাপক অংশগ্রহণেই নির্বাচন হচ্ছে। সেক্ষেত্রে যে কোন ধরণের সহিংসতা ও পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশ প্রশাসন তৎপর রয়েছে।
সূত্র মতে আরো জানায়, মাদারীপুরে দ্বিতীয় দফা নির্বাচনের সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নেই প্রার্থীদের জন্য দলে দলে ভোট চাইতে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন নারীরা। শুধুমাত্র নারীদের নিয়েও জনসভা হচ্ছে অনেক জায়গায়। কোন কোন জায়গায় অর্ধশত থেকে শতাধিক নারী শ্লোগান দিয়ে মিছিলও করছেন।
মাদারীপুরে প্রথম দফা ইউপি নির্বাচনে ভোটের লাইনে পুরুষদের চেয়ে নারী ভোটারদের উপস্থিতিই ছিল বেশি। এবার ৩১ মার্চ দ্বিতীয় দফা নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটের মাঠে নারীদের সবর পদচারণা সর্বক্ষেত্রে নারীর অগ্রগতিকেই নির্দেশ করছে। চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীরা বাধ্য হচ্ছেন নারীদের গুরুত্ব দিতে। কারণ সচেতন নারীদের ভোট পেতে তাদের রাজনৈতিকভাবে গুরুত্ব দেওয়ার বিকল্প নেই।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।