‘উইমেন পুলিশ অ্যাওয়ার্ড’ পাচ্ছেন ৩৩ নারী পুলিশ
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রকাশ : ২৩ মার্চ, ২০১৬
প্রিন্টঅঅ-অ+
বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য ছয়টি ক্যাটাগরিতে ৩৩ নারী পুলিশ সদস্যকে ‘উইমেন পুলিশ অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টারের লজিস্টিক অ্যান্ড প্রকিউরম্যান্ট বিভাগের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিলি বিশ্বাস।
আজ বুধবার (২৩ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টায় পুলিশের সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। বাংলাদেশ ‘উইমেন পুলিশ অ্যাওয়ার্ড’ ২০১৬ সম্পর্কে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
মিলি বিশ্বাস জানান, আগামী ৩১ মার্চ সন্ধ্যা সাতটায় আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরায় (আইসিসি,বি) আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাদের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেবেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
মিলি বিশ্বাস বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ একটি পুরানো এবং ঐতিহ্যবাহী সংগঠন। প্রতিদিন প্রতিক্ষণে প্রতি এলাকায় দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে আমরা মানুষকে নিরাপত্তা সেবা দিই। মানুষের শান্তির ঘুম ও সম্পদের নিরাপত্তা দিতে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এই সেবা শুধু দেশের মাটিতে নয়, আন্তর্জতিক পরিমণ্ডলেও বিস্তৃত। বাংলাদেশ নারী পুলিশের সদস্যরা আজকে আন্তর্জাতিক শান্তি প্রতিষ্ঠার পথিকৃৎ এবং রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ জাতিসংঘের আওতায় শান্তি মিশনে ২০০০ সালে প্রথম নারী পুলিশের নেতৃত্ব পূর্ব তিমুরে যাত্রা শুরু করে। ২০১০ সালে প্রথম পূর্ণাঙ্গ নারী কন্টিনজেন্ট পাঠিয়েছে হাইতি। সেখানে যুদ্ধবিধ্বস্ত সংক্রামক ব্যাধি আক্রান্ত জনপদে আমাদের মেয়েদের অবদান সারা বিশ্বে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। স্বীকৃতি স্বরূপ তাদের অবদানে উৎফুল্ল জাতিসংঘ ‘এ জানি অব থাউজেন্ট মাইলস পিসকিপারস শিরোনামে’ একটি ডকুমেন্টারি বানিয়েছে বাংলাদেশের নারী পুলিশকে নিয়ে।
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, নারী-পুরুষ নয়, মানুষ হিসেবে দেখলে চ্যালেঞ্জিং পেশায় আমাদের মেয়েদের অবস্থান আজকে অত্যন্ত পরিষ্কার। প্রাচীন চীনে, এক শতাব্দী আগে ইউরোপে যে নারী পুলিশের প্রচলন শুরু হয়েছে সেটা আমাদের দেশে চালু হয়েছে ১৯৭৪ সালে। প্রথমে ছয়জন নারীকে পুলিশ কনেস্টেবল হিসেবে গোয়েন্দা বিভাগে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। গোয়েন্দাকাজে তাদের যোগ্যতা ও অবদানের পরিপ্রেক্ষিতে আরও নারী পুলিশ সদস্যকে পুলিশ বিভাগে অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত হয়। ৪২ বছর পরে আজকে পুলিশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদ এডিশনাল আইজিপি থেকে শুরু করে কনেস্টেবল পদে মোট আট হাজার ৮২৪ জন নারী সদস্য কর্মরত।
মিলি বিশ্বাস আরও বলেন, ভালো কাজের স্বীকৃতি ভালো কাজকে আরও উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করে। নারী পুলিশদের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শান্তি রক্ষার ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি এবং তাদেরকে অনুপ্রাণিত করার উদ্যোগ নিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহা-পরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক। তারই সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে বাংলাদেশ পুলিশে উইমেন লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড, এক্সেলেন্স ইন অ্যাক্ট, মেডেল অব কারেজ, কমিউনিটি সার্ভিস, পিসকিপিং মিশন স্পেশাল অনার অ্যাওয়ার্ড ও এন্টারপ্রেনার উইমেন অর্গানাইজেশন অব দ্যা ইয়ার। এই ছয়টি ক্যাটাগরিতে মোট ৩৩ জনকে পুরস্কার দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সারা দেশের নারী সদস্যরা তাদের বীরত্বপূর্ণ এবং কৃতিত্বপূর্ণ কাজের বিবরণী সাইটেশন জমা দিয়েছেন। সব পদের জন্য এই পুরস্কার উন্মুক্ত। প্রতি বছর এই পুরস্কার দেয়া হবে। আগামী ৩১ মার্চ সন্ধ্যা সাতটার সময় আন্তর্জাতিক কনভেশন সেন্টার বসুন্ধরায় তুলে দেয়া হবে সেই পুরস্কার। পুরস্কারের তালিকায় থাকবে একটি ক্রেস্ট, একটি সনদ ও ১০ হাজার টাকা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) মো. নজরুল ইসলাম, সহকারী মহাপরিদর্শক (অপরাধ) রেবেকা সুলতানা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডিসিপ্লিন সাদিরা খাতুন, আমর্ড পুলিশের ১১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক সালমা, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কোতোয়ালী জোনাল টিমের সহকারী কমিশনার মাহমুদা আফরো লাকীসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।