কক্সবাজারে আ.লীগে ৭, বিএনপি ৩, স্বতন্ত্র ২, বিদ্রোহী ৩ বিজয়ী
কক্সবাজারে প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে টেকনাফ, মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার ১৬ ইউপিতে ২০৮ জন জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। রাত সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত পাওয়া খবরে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান হয়েছেন ৭ জন। ধানের শীষ প্রতীকে জয় পেয়েছেন ৩ জন। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচনে লড়ে জয় পেয়েছেন ৩ জন ও স্বতন্ত্র হিসেবে জয় পেয়েছেন ২ জন প্রার্থী।
বিকাল ৪টার পর থেকে ভোট গণনা শেষে বেসরকারি ভাবে তাদের জয়ী ঘোষণা করেছেন সংশ্লিষ্ঠ রিটার্নিং কর্মকর্তারা। ইউনিয়নগুলোর ৩৬টি ভোটকেন্দ্রের ২১৬টি স্থায়ী ভোটকক্ষ ও ৪১টি অস্থায়ী ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ চলে।
মহেশখালীর ৬টি ইউনিয়নের মাঝে ছোট মহেশখালীতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জিহাদ বিন আলী ৬ হাজার ৮৮২ পেয়ে বেসরকারীভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দী আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী আবদু সামাদ পেয়েছেন ৩ হাজার ১৯৮।
কুতুবজোম ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোশারফ হোসেন খোকন বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৮ হাজার ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী বিএনপির মওলানা শফি পেয়েছেন ২ হাজার ভোট। মাতারবাড়ী ইউনিয়নে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মাষ্টার মোহাম্মদ উল্লাহ। তিনি পেয়েছেন ৮ হাজার ৩১৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী বিএনপির নাছির উদ্দিন বাবর ৬ হাজার ৩৭০ ভোট। বড় মহেশখালী স্বতন্ত্রপ্রার্থী এনায়েত উল্লাহ বাবুল (চশমা) এগিয়ে রয়েছেন। হোয়ানক ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মোস্তফা কামাল নির্বাচিত হয়েছেন। ধলঘাটায় নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী কামরুল হাসান।
এ ৬ ইউনিয়নে মোট ১ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩১ জন ভোটার ছিলেন। মহেশখালীতে ৭৪টি ভোটকেন্দ্রের ৩৯৪টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ চলে। এসব উপিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন ৩৩ জন, সংরক্ষিত নারী সদস্য প্রার্থী ৭৩ জন এবং সাধারণ সদস্য প্রার্থী ছিলেন ৩০৬ জন।
কুতুদিয়ার ৬ ইউনিয়নে দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থী ছৈয়দ আহমদ ৩ হাজার ৩০৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী স্বতন্ত্র প্রার্থী আলাউদ্দিন আল আজাদ পেয়েছেন ৩ হাজার ১০২ ভোট।
লেমশীখালী ইউনিয়নে বিএনপি প্রার্থী আকতার হোসাইন ৫ হাজার ৫৫২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী ছিল আওয়ামী লীগের ছৈয়দ আহমদ কুতুবী পেয়েছেন ২ হাজার ৩৯৬ ভোট। উত্তর ধুরং ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী আ স ম শাহরিয়ার চৌধুরী বেসরকারীভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৪ হাজার ৫১০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী আওয়ামী লীগের ইয়াহিয়া পেয়েছেন ২ হাজার ৬৩০ ভোট। আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নুরুচ্ছফা বিকম, বড়ঘোপ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের অ্যাড. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, কৈয়ারবিল ইউনিয়নে বিএনপির হাম জালাল বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
এসব ইউনিয়নে মোট ভোটার ছিলেন ৮১ হাজার ৯৭৭ জন। উপজেলায় ৫৪টি ভোটকেন্দ্রের ১৮৮টি ভোটকক্ষে ভোট চলে।
৬ ইউপিতে এবার চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ছিলেন ২৯ জন। সংরক্ষিত নারী সদস্য প্রার্থী ৬০ জন এবং সাধারণ সদস্য প্রার্থী ছিলেন ২০৩ জন।
টেকনাফ উপজেলার ৪ ইউনিয়নের বাহারছড়ায় ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মৌলভী আজিজ বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। সেন্টমার্টিনে এক হাজার ৩৪ ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নুর আহমদ বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী আওয়ামী লীগের প্রার্থী মুজিবুর রহমান পেয়েছেন ৭৪৫ ভোট। সাবরাংয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হযেছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী নূর হোসেন। রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত টেকনাফ সদর ইউনিয়নে কোন প্রার্থী জয় পেয়েছেন তা নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কেউ জানাতে পারেননি। তবে অসমর্থিত একসূত্র দাবি করেছেন অন্যান্য প্রার্থী থেকে ১৩৪ ভোটে চেয়ারম্যান পদে এগিয়ে রয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যানের ছেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজান মিয়া। এ ৪ ইউনিয়নে মোট ভোটার ছিল ৭৬ হাজার ৭৭৭ জন।
অপরদিকে, একইদিন টেকনাফের হোয়াইক্যং ও হ্নীলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও আইনী জটিলতার কারণে নির্বাচন পিছিয়ে আগামী ২৭ মার্চ নির্ধারণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার চলমান অন্য ইউনিয়নের সাথে মহেশখালীর কালারমারছরায়ও নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্ততি নেওয়ার পরও শেষ মুহূর্তে এসে সোমবার এ ইউনিয়নের নির্বাচন স্থগিত করা হয়। হাইকোর্টের একটি রীট পিটিশনের বিপরীতে নির্বাচন কমিশন এটি স্থগিত রাখতে সিদ্ধান্ত দেয়।
কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মেছবাহ উদ্দিন জানান, ভোট সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কিছু কিছু ইউনিয়নে কেন্দ্রের বাইরে বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন থাকায় এ সংঘর্ষ ভোট গ্রহণে কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি আরো জানান, আইনপ্রয়োগকারি সদস্যদের পাশাপাশি প্রতিটি উপজেলায় ৩ জন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করায় কেউ ভোট কেন্দ্রে কেউ অপ্রীতিকর ঘটনা করার সাহস পায়নি।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।