কর্তৃপক্ষের ওপর মায়ার আইনজীবীর উল্টো অভিযোগ
বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে বড় অঙ্কের অর্থ চুরির ঘটনায় তোপের মুখে থাকা ফিলিপাইনের ব্যাংক রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) শাখা ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস দেগুইতোর আইনজীবী দেশটির বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন।
মায়ার আইনজীবী ফার্দিনান্দ টপাচিনোরের তালিকায় অভিযুক্তকারীরা হলেন- দেশটির অ্যান্টি মানি লন্ডারিং কাউন্সিল (এএমএলসি), রিজাল ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তারা, ঘটনা তদন্তে ব্যাংকের গঠন করা নিজস্ব তদন্ত দল। ফিলিপাইনের ‘দৈনিক ইনকোয়ারা’ এর প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে।
ফার্দিনান্দ টপাচিনোর অভিযোগ, এ ঘটনায় দেশটির অ্যান্টি মানি লন্ডারিং কর্তৃপক্ষের অবহেলা রয়েছে। তারা শুধু মায়ার বিরুদ্ধে মামলা করার মাধ্যমে ঘটনা ধামাচাপা দিতে চাইছে।
মায়ার আইনজীবী বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিবৃতিতে বলেন, গত সপ্তাহে মায়ার বিরুদ্ধে ফিলিপাইনের বিচার বিভাগে মানি লন্ডারিংয়ের মামলা করে এএমএলসি। বলা হচ্ছে এ ঘটনার সঙ্গে অনেক বিত্তশালী, ক্ষমতাবান ও ভালো যোগাযোগ-সম্পন্ন ব্যক্তিরা জড়িত। তবে আমাদের বিশ্বাস, সিনেট কাউকে ছাড় দেবে না; তিনি যে কেউ হোন না কেন, ফিলিপাইনের ব্যাংকিং খাত ও সমাজে যে গুরুত্বপূর্ণ পদেই থাকুন না কেন, এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর হবে না।’
এদিকে অর্থপাচারবিরোধী আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে রিজাল ব্যাংকের হিসাবধারী আরও চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে অ্যান্টি মানি লন্ডারিং কর্তৃপক্ষ। রিজাল ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ তদন্তে দেখা গেছে, এসব হিসাব ছিল সন্দেহজনক। কিন্তু মায়ার আইনজীবী রিজাল ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন, তারা গুটিকয়েক ব্যাংক কর্মকর্তার ওপর এ ঘটনার দায় চাপিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চাচ্ছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে রিজাল ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট লরেঞ্জো তানের আইনজীবী ফ্রান্সিস লিম বলেন, শাখা ব্যবস্থাপক হিসেবে মায়া ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্যই নিজেকে ছাড়া অন্যদের মিথ্যাবাদী বলে প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন।
মায়ার আইনজীবী ফার্দিনান্দ আরো অভিযোগ করে বলেন, বিষয়টির সঙ্গে জড়িত থাকার যথেষ্ট প্রমাণ থাকার পরও অনেকের বিরুদ্ধে অ্যান্টি মানি লন্ডারিং কর্তৃপক্ষ মামলা করেনি। কর্তৃপক্ষ হয় বিষয়টি নিয়ে ঠিকমতো কাজ করেনি; বরং রাঘব বোয়ালদের রক্ষা করার চেষ্টা করছে।
অভিযোগ প্রমাণিত হলে রিজাল ব্যাংকের জুপিটার স্ট্রিট শাখার ব্যবস্থাপক মায়ার সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ডাদেশ হতে পারে বলে প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্টের আইনজীবী ফ্রান্সিস লিম জানিয়েছেন। আর মায়ার আইনজীবীর মতে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে ৭ থেকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে তাঁর মক্কেলের।
মায়ার আইনজীবীর অভিযোগ, রিজাল ব্যাংকের প্রেসিডেন্টের আইনজীবীদের প্রতিষ্ঠানই ব্যাংকটির অভ্যন্তরীণ তদন্তের কাজটি করছে। এ কারণে তদন্ত পক্ষপাতযুক্ত হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
তিনি নৈতিক দায় নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদ থেকে সরে দাঁড়ানো আতিউর রহমানের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, রিজাল ব্যাংকের প্রেসিডেন্টেরও উচিত ঘটনার দায় নিয়ে পদত্যাগ করা। এ ঘটনার কারণে যে ক্ষতি হয়েছে, তার জন্য বাংলাদেশের মানুষের কাছে তিনি দুঃখপ্রকাশ করেন।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।