রাজশাহীতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের বিক্ষোভ ও সমাবেশ
রাজশাহী মহানগরীতে রাজশাহীর পুঠিয়ায় ভূমিদস্যু কর্তৃক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের জমি দখলের চেষ্টা, দিনাজপুরের চিরির বন্দরে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী নারীকে গণধর্ষণের পর হত্যা, ফুলবাড়ীতে আদিবাসী নারী হত্যা, নওগাঁর মহাদেবপুরে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী নারীকে ধর্ষণ চেষ্টা ও সারাদেশে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী উপর ঘটে যাওয়া সহিংসতার প্রতিবাদ ও জড়িতদের বিচারের দাবিতে রাজশাহী মহানগরীতে উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে আদিবাসী ছাত্র পরিষদ।
বুধবার(১৬ মার্চ) সকাল ১১ টায় বিক্ষোভ মিছিলটি গণকপাড়া মোড় থেকে শুরু হয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে গিয়ে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আদিবাসী ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বিভূতী ভূষণ মাহাতো। সমাবেশে বক্তব্য প্রদান করেন আদিবাসী ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হেমন্ত মাহাতো। সংহতি বক্তব্য প্রদান করেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদের দপ্তর সম্পাদক সূভাষ চন্দ্র হেমব্রম, আদিবাসী যুব পরিষদ রাজশাহী জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক হুরেন মুর্মুম।
উল্লেখ্য, রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার ভালুকগাছী ইউনিয়নের বাঁশবাড়ীয়া গ্রামের আদিবাসী পল্লী উচ্ছেদের পাঁয়তারা করছে কিছু ভূমিদস্যু ও ক্ষমতাসীন দলের একজন প্রভাবশালী নেতা। আদিবাসী পল্লীর দরিদ্র কৃষকদের জমির মালিকানা দাবি করে দীর্ঘদিন হেনস্থা করে আসছেন এলাকায় আবদুস সামাদ ওরফে মুসা নামে এক প্রভাবশালী।
গত ১ মার্চ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় শতাধিক স্বশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বাঁশবাড়ীয়া আদিবাসী পল্লীতে গিয়ে অস্ত্রের মুখে আদিবাসীদের ভয়ভীতি দেখায়। আনুমানিক ৬০বিঘা জমিতে তারা সীমানা পিলার পুতে রাখে।
মুসার নামে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। এলাকার মানুষকে নির্যাতনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন তিনি। আদিবাসীদের জমি দখল চেষ্টার পর এখন সেই অভিযোগও সামনে চলে এসেছে। জানা যায়, ১৯৬৪-৬৫ সালে বাঁশবাড়ীয়া গ্রামের মাতলা হেমব্রন, শকাত মাড্ডি ও মুংলী টুডু ভারতের আলহাজ আব্বাস আলী গংদের সাথে ১৫২ বিঘা জমি দিয়ে ৩/৪টি বিনিময় দলিল সম্পাদন করেন। এরপর তারা ভারতে গিয়ে তাদের নামের জমি না পাওয়ায় তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্থানে ফিরে এসে নিজ জমি দখলে নেয়। পরবর্তীতে আদিবাসী পল্লী উচ্ছেদে আব্বাস আলী গংরা জমি বিক্রি শুরু করে। দখল নিতে এসে একাধিকবার দু’পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়।
২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে এক আদিবাসী মহিলাকে গণধর্ষনের পর পড়নের শাড়ী দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ভিয়াইল ইউনিয়নের দূর্গাডাঙ্গা বাজারের পূর্ব পার্শ্বে আদিবাসী
পাড়ায়।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার এলুয়াড়ি ইউনিয়নের শ্রীরামপুর আদিবাসী পাড়ায় স্বামীর নির্যাতনে ফুলমনি মার্ডি (৩৪) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ফুলমনির স্বামী গুপিন হাসদাকে (৪০) গ্রেপ্তার
করেছে পুলিশ। এদিকে গত ১ মার্চ ২০১৬ নওগাঁর মহাদেবপুরে এক আদিবাসী নারী ধর্ষণের শিকার হন।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।