মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার বাগানে বাগানে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান ও উৎসবমুখর পরিবেশে নতুন বছরের চা পাতা উত্তোলন শুরু হয়েছে। আগাম বৃষ্টি হওয়ায় এবার অন্য বছরের চেয়ে প্রায় মাসখানেক আগেই কমলগঞ্জ উপজেলায় চাপাতা উত্তোলন শুরু হয়। নতুন পাতা উত্তোলনের আনন্দে বাগানে বাগানে চলছে দোয়া, শিরনী বিতরণ ও পূর্জাচনাসহ নানান ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি। আর বছরের শুরুতে ভালো পাতা পেয়ে খুশি চা শিল্প সংশ্লিষ্টরা। 

শ্রীগোবিন্দপুর চা বাগানের ১নং সেকশনে ম্যানেজার, সহকারী ম্যানেজার, শ্রমিক ও স্টাফদের নিয়ে মঙ্গলবার সকালে চা পাতা উত্তোলনের উদ্বোধন করেন বাগানের মালিক মহসীন মিয়া মধু। সারাবছর যাতে প্রচুর পাতা পাওয়া যায় এবং আবহাওয়া অনুকুলে থাকে এই কামনায় আয়োজন করা হয় দোয়া, মিলাদ মাহফিল, বৃক্ষ পূজা ও নতুন পাতাকে স্বাগত জানিয়ে চা শ্রমিকদের ঐতিহ্যবাহী গীতিনৃত্য।

শ্রীগোবিন্দপুর চা বাগান মালিক মহসীন মিয়া মধু জানান, বাংলাদেশে তার বাগানের হেক্টর প্রতি সর্বাধিক চা উৎপাদনের রেকর্ড রযেছে। এই উৎপাদন রেকর্ড ধরে রাখার জন্য তিনি মালিক, শ্রমিক, স্টাফ, ম্যানেজার সবাইকে এক পরিবারের সদস্য হিসেবে গণ্য করেন। ফলে প্রত্যেকের সমস্যা ও সুযোগ সুবিধা আন্তরিকতার সহিত দেখে থাকেন। এর ফলে বাগানে প্রত্যেকেই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেন এবং ফলনও ভালো হয়। 

তিনি আরো জানান, এবছর আগাম বৃষ্টি পেয়েছেন, ক্রপ আগাম তুলছেন, আর বছরের বাকি সময় পরিমিত বৃষ্টি হলে ও আবহাওয়া অনুকুলো থাকলে এবছর তার গড় উৎপাদন আরও বাড়বে। 

উল্লেখ্য, প্রতিবছর ডিসেম্বরের প্রথম দিকে পাতা চয়ন বন্ধ হয়ে যায় এবং মার্চ পর্যন্ত গাছের পরিচর্যা ও ফেক্টরীর মেন্টেইনেন্স শেষে শুরু হয় নতুন করে উৎপাদন। এসময় চা কররা আশা প্রকাশ করেন, চলমান আবহাওয়ার মতো সারা বছর আবহাওয়া অনুকূলে পেলে এবছর তাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি চা উৎপাদন হবে। ডিসেম্বরে চা গাছের মাথা কেটে দেওয়ার প্রায় ৪ মাস পর মৌলভীবাজারের চা বাগানগুলোর গাছে গাছে এখন শুধু সবুজপত্রমঞ্জুরী। শ্রমিকরা পাতা তুলতে গিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যেই ভরে যাচ্ছে হাত। বেশি পাতা তুলতে পেরে হাজিরা পাবেন বেশি আর এ ভাবে যেন সারাবছর পাতা তুলতে পারেন সেজন্য ঘরে ঘরে তারা করছেন পূর্জাচনা। করছেন দোয়া মাহফিল ও শিরনী বিতরণ।