শুষ্ক মৌসুমে প্রতি বছর তিস্তা নদীতে বিশাল চরে পরিণত হয়। পানি না থাকায় জেগে উঠা বিশাল চরে বিভিন্ন ফসলের চাষ হয়েছে। চারদিকে শুধু সবুজের সমারোহ। যেন তিস্তার বুকে সবুজের হাতছানি। তিস্তার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চরগুলোতে জমি তৈরি, বীজ বপন, পরিচর্যা বা ফসল তোলার ধুম পড়ে যায়। অবশ্য এই অঞ্চলে চাষাবাদে নারীরা বেশি এগিয়ে আছে।

চরাঞ্চলেই এবার ভুট্টাসহ কয়েকটি ফসলের বাম্পার ফলন হয়েছে। আর চিরাচরিত কয়েকটি ফসল ছাড়াও এবার একাধিক নতুন সবজির চাষ যোগ হয়েছে। এই অঞ্চলে সবজির আবাদ সবচেয়ে বেশি হয়েছে তিস্তার চরাঞ্চলে এবং ফলনও হচ্ছে। তিস্তা চরে সবজি চাষ করে অনেক পরিবার স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে। লাউ, ধনেপাতা, লালশাক, পুঁইশাক, মূলাশাকসহ কয়েকটি সবজি চাষ করে পরিবারে চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয় করছেন তারা। নানা ধরনের সবজি ও ফসলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ভুট্টা, মিষ্টি কুমড়া, বাদাম, মিষ্টি আলু, মরিচ, গম, পেঁয়াজ, রসুন, আলু, ডাল, লাউ, সরিষা, ইরি, বোরো এমনকি তামাকও উৎপাদন হচ্ছে।

চাষী হাজেরা বেগম জানান, চরে ভুট্টা, বাদাম, মরিচ আর পেঁয়াজ আবাদ করছি। ভাল ফলন হয়েছে। এই তিস্তা চরে আবাদ করে আমাদের সংসার চলে। জায়গা জমি নাই, তাই প্রতি বছর তিস্তার পানি কমলে সবজি চাষ করি। তিনি আরও বলেন, সবজি চাষে যদি সরকার ঋণ প্রদান করেন তাহলে আমরা উপকৃত হবো।

হাতীবান্ধা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ মৌসুমে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের চর এলাকায় ভুট্টা চাষ হয়েছে ৩ হাজার ৫৫০ হেক্টর, পেঁয়াজ ১৮০ হেক্টর, বাদাম ১০০ হেক্টর, তামাক ১৫০ হেক্টর, গম ৪০ হেক্টর, রসুন ৫০ হেক্টর, ইরি বোরো ৫০ হেক্টর, কালোজিরা ১০ হেক্টর।

হাতীবান্ধা উপজেলা কৃষি অফিসার আনোয়ার হোসেন বলেন, তিস্তা চরের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের গম ও সরিষা বীজ বিনামূল্য বিতরণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, চর এলাকায় আমাদের গমের প্রদর্শনী রয়েছে। এই চরের কৃষকরা এখন চাষবাদে বেশি উৎসাহী হচ্ছেন।