সঞ্চয়পত্রে ঋণ ৭ মাসেই ছাড়িয়েছে বছরের লক্ষ্য
বাজেট ঘাটতি মেটাতে চলতি অর্থবছরে সরকার সঞ্চয়পত্র থেকে যে টাকা ধার করার কথা ভেবে রেখেছিল, সাত মাসেই তার চেয়ে বেশি ঋণ নেওয়া হয়ে গেছে।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্যে দেখা যায়, জুলাই-জানুয়ারি সময়ে সঞ্চয়পত্র থেকে ১৬ হাজার ৬০৩ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার। অথচ পুরো অর্থবছরে ১৫ হাজার কোটি টাকা এ খাত থেকে নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছিল এবারের বাজেটে।
অবশ্য এই ধারা নতুন নয়। গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে সরকার সঞ্চয়পত্র থেকে ৯ হাজার ৫৬ কোটি টাকার ধার করার লক্ষ্য ধরলেও বছর শেষে তা ২৮ হাজার ৭৭৩ কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকে।
সর্বশেষ জানুয়ারি মাসে সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশে। ওই মাসে সবমিলিয়ে পাঁচ হাজার ১০০ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। নিট বিক্রিতেও হয়েছে রেকর্ড; তিন হাজার ৩০০ কোটি টাকা। আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রগুলোর সুদ-আসল বাবদ পরিশোধ করা এক হাজার ৮০০ কোটি টাকা বাদ দিয়ে এই নিট বিক্রি হিসাব করা হয়েছে।
সঞ্চয়পত্র বিক্রির টাকা সরকারের কোষাগারে জমা থাকে। প্রয়োজন হলে সরকার এই টাকা নিয়ে খরচ করে। সরকার খরচ করুর বা না করুক তার জন্য গ্রাহকদের সুদ দিতে হয়। বেড়ে যায় সরকারের ‘ভবিষ্যৎ ঋণের’ বোঝা।
বিক্রি অস্বাভিাবিক বেড়ে যাওয়ায় এই ঋণের বোঝা কমাতে গত বছরের মে মাসে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের সুদের হার গড়ে ২ শতাংশ করে কমানো হয়।
মে মাসের আগ পর্যন্ত পাঁচ বছর মেয়াদি এক লাখ টাকার পরিবার সঞ্চয়পত্র কিনলে প্রতি মাসে এক হাজার ৭০ টাকা মুনাফা পেতেন একজন গ্রাহক। সুদের হার কমায় এখন পাচ্ছেন ৯১২ টাকা।
সরকার প্রত্যাশা করেছিল সুদের হার কমালে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমবে; ঋণের বোঝাও কমবে। কিন্তু তা হয়নি। সুদের হার কমানোর পরও সঞ্চয়পত্রের বিক্রি কমেনি।
অর্থনীতির বিশ্লেষক জায়েদ বখত বলেন, সুদের হার কমানোর পরও ব্যাংকগুলোর আমানতের সুদের হারের চেয়ে বেশি মুনাফা পাওয়ায় এখনও সঞ্চয়পত্রের দিকেই ঝুঁকছে মানুষ। তাছাড়া পুঁজিবাজারের মন্দাবস্থা এ খাতে বিনিয়োগ বাড়ার অন্যতম কারণ।
এতোদিন বাংলাদেশ ব্যাংকে যেদিন টাকা জমা দেয়া হতো, সেদিনই সঞ্চয়পত্রের বই বা সংশ্লিষ্ট কাগজ গ্রাহককে দিয়ে দেওয়া হতো। কিন্তু এখন সেই বই বা কাগজ দেয়া হয় এক সপ্তাহ পর। আগের চেয়ে এ খাতে বিনিয়োগ অনেক বেড়ে যাওয়ায় প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করে ‘এগুলো’ দিতে এখন দেরি হয় বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।