নোয়াখালী সরকারি কলেজে শিক্ষার্থীদের ভাংচুর
নোয়াখালী সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স চতুর্থ বর্ষের (০৯-১০ শিক্ষাবর্ষ) চূড়ান্ত পরীক্ষায় শিক্ষকদের হাতে থাকা ব্যবহারিক (ইনকোর্স) নাম্বার কম দেওয়ায় ৯৮ জন শিক্ষার্থীর গ্রেটিং ফলাফলে বিপর্যয় ঘটে। এর মধ্য ২৬ জন সব বিষয় নিয়ে উত্তীর্ণই হতে পারেনি। যার ফলে এসব শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এজন্য ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান-তবিবুর রহমানের ভুল সিদ্ধান্তকে দায়ী করেছেন বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার ৪ ফেব্রুয়ারি সকাল এগারটার দিকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অফিসে ভাংচুর করে বিভাগের মূল গেইটে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স চূড়ান্ত পর্বের ফলাফলের উপর দুইবার পুনঃনিরীক্ষণ করা হলেও এসব শিক্ষার্থীর ফলাফলের কোনো নিরীক্ষণ না করায় এমন ভাংচুর চালিয়েছেন বলে জানান বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান তবিবুর রহমান জানান, শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাশসহ অন্যান্য বিষয় সমূহ ঠিকমত মেনে না চলায় নাম্বার কম দিয়েছি। কিন্তু বিভাগের অন্য দুই প্রভাষক জুলফিকার হায়দার এবং আব্দুর রাজ্জাক বলেন- শিক্ষার্থীরা যথেষ্ট ভালো ছিলো এবং উপযুক্ত নাম্বারও পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তবিবুর রহমান স্যারের কারণে শিক্ষার্থীরা সেই নাম্বার পায়নি। এমন কি আমরা দুজন মোট নয় বিষয়ের মধ্যে ছয় বিষয়ে শিক্ষার্থীদের ভালো নাম্বার দিয়েছিলাম। যেটা তাদের প্রাপ্য। কিন্তু তবিবুর রহমান স্যার আমাদের দেওয়া নাম্বারকে বাদ দিয়ে উঁনি নিজের মত করে নাম্বার দিয়েছেন। যার ফলে শিক্ষার্থীদের ফলাফলের বিপর্যয় ঘটে।
নোয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আবু হেলাল মোঃ মোশারফ হোসেন জানিয়েন তাঁর সামর্থ্য এবং সীমাবদ্ধতার কথা। তিনি বলেন, আমার শিক্ষক যে ভুল করেছে তার সমাধান আমার আওতাই নেই। এটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের অধীনে। তবুও আমি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে। আমি আমার শিক্ষার্থীদের নিয়ে বোর্ডে সরাসরি গিয়েছি। তারা আমাকে আশ্বাস দিচ্ছেন। এনএসআই মোয়াজ্জেম হোসেন এবং ডিইএফআই মতিউর রহমান ঘটনা পরিদর্শন করেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর অনার্স চার বছর মেয়াদী কোর্সের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের ফলাফল ঘোষণার পর শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। তখন শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এবং রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোক্তার হোসেন ও একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক লোকমান হোসেন এবং হিসাববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আব্দুর কাদের পর পর দুইবার ঘটনা তদন্ত করেন। তদন্তে ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান তবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তারা শিক্ষার্থীদের নিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করেন। সেসময় শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দিয়ে আশ্বস্ত করা হয়। তারপর এই পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।