নারী ও শিশু কি মানুষ না?
জন্ম থেকেই চিরাচরিত সমস্যা যানজট সহ্য করেই বড় হচ্ছি। যানজটের করণে যথাসময়ে কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারে না কর্মজীবীরা। একইভাবে শিক্ষার্থীদের সময়মত স্কুল-কলেজে হাজির হতে ভোগান্তি পোহাতে হয়। তীব্র যানজটে আটকা পড়া অ্যাম্বুলেন্সের ভিতরে যন্ত্রণায় কাতরানো রুগীর অনুভূতি কর্তৃপক্ষের অনুভব হওয়ার কথা নয়।
রাজধানীর রাস্তায় প্রতিদিন-ই বাসে অতিরিক্ত যাত্রী ওঠায় দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটছে। কিছু বাসে অল্পকিছু যাত্রী আরাম করে গন্তব্যস্থলে যাচ্ছেন। আবার কিছু বাসের গেটের বাহিরে পর্যন্ত ঝুলে থাকেন যাত্রীরা! যাত্রীদের এ ভোগান্তি আবার সবার ক্ষেত্রে সমান নয়। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের জন্য ভোগান্তির পরিমাণটা আরো বেশি।
সকাল ৯টার পরে নারীদের বাসে ওঠা বলা চলে অসম্ভব হয় যায়। মহিলা সিট খালি না থাকলে নারীদের বাসে ওঠতে দেওয়া হয় না। বেশিরভাগ গণপরিবহনে ৪-৬টির বেশি মহিলা সিট থাকে না। নারীরা দাঁড়িয়ে যেতে চাইলেও বাসে তাঁদের ঠাঁই মেলে না। আবার, কোন নারীর সঙ্গে যদি শিশু থাকে তাহলে তো কথায় নেই, বাসে ওঠতে গেলে হেলপার দরজা আগলে রেখে রাস্তা বন্ধ দেয়। কোনো সিটে শিশু বসা দেখলে হেল্পার ও যাত্রীরা গলা মিলিয়ে বলে ‘এই বাচ্চাকে কোলে নেন’... কিন্তু কেনো? শিশুদের কি বাসের সিটে বসার অধিকার নেই?
ছাত্র-ছাত্রীদের দেখলে বাসের ড্রাইভার দ্রুত এলাকা ছাড়া হতে চায়। অর্ধেক ভাড়ার কারণেই শিক্ষার্থীদের দেখলে বাসচালকদের মাথা ঠিক থাকে না।
সন্ধ্যা নামতেই মহিলা সিটগুলো চলে যায় পুরুষদের দখলে। এসময় নারী যাত্রীরা দাঁড়িয়ে থাকেন, আর তাঁদের জন্য নির্ধারিত সিটে বসে থাকে পুরুষরা। উঠতে বললে বলে, ‘পুরুষ সিটে যখন মহিলা বসে আমরা উঠতে বলি? কোন নারী প্রতিবাদ করতে গেলে বাজে পরিস্থিতির সম্মুখিন হতে হয়। অনেক বাসের জানালার পাশে লেখা থাকে- ‘মহিলা সিটে বসে পুরুষ সাজবেন না’!
ছেলেরা যখন ছোট পোশাক পরে তখন কি মেয়েরা তাদের বাজে কথা বলে? অথচ, আমি যখন ইভটিজিং এর শিকার হই তখন গায়ের পোশাককে দায়ী করা হয় কেনো?
আমি যদি যৌন হয়রানির শিকার হই তবে সমাজ বলে আমি খারাপ। এলাকার কোনো ছেলে আমাকে উত্যক্ত করলে মা-বাবা আমার স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেন। তারা বলে, ‘ছেলেরা ওই রকম করবেই। তুমি নিজেকে সামলাও’। কিন্তু কেন?
আমার ভাই রাত ১০টা পর্যন্ত বাসার বাহিরে থেকে খেলাধুলা করে। মা কিছু বলেন না। কিন্তু আমি সন্ধ্যার পরে বাসার নিচের দোকানে কলম কিনতে যেতে চাইলেও মা আমাকে ‘না’ করেন। কিন্তু কানো? আমি মেয়ে বলে কি আলাদা?
স্কুলের ভারি ব্যাগ বহন করা শিশুদের জন্য কষ্টকর ব্যাপার। চারিদিকে এতো ডিজিটালের ছড়াছড়ি, বই খাতা কেনো ডিজিটাল করা হচ্ছে না?
স্কুলে টিফিন বিরতিতে মাঠে গিয়ে খেলা করতে খুব ইচ্ছা হয়। কিন্তু আমার স্কুলে মাঠ নেই। খেলতে পারা কি আমার অধিকার নয়?
শারীরিক সুস্ততার জন্য প্রতিদিন শরীরচর্চা দরকার। ঢাকার বেশিরভাগ স্কুলে অ্যাসেম্বলি হয় না। কেনো হয় না এই প্রশ্নের উত্তর কে দেবে?
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।