সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়াতে মন্দিরে গোমাংস ছুড়েছিলো আরএসএস সদস্য
মন্দিরে গোমাংস খণ্ড ছুড়তে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে বোরখা পরা ভারতের স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) এক কর্মী।
গরুর মাংস নিষিদ্ধ হওয়ার পর হিন্দু মন্দির চত্বরে গোমাংস ছুঁড়ে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা উসকে দেওয়ার ঘটনা মাঝে মাঝেই ঘটছে। উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ে এমন ঘটনার পেছনের রহস্য উন্মোচন হলো।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মন্দিরের ভেতর মাংসখণ্ড ছুঁড়ে পালানোর সময় ধরা পড়ে বোরখা পরা এক তরুণ। টুইটারে সেই ছবি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে তা ভাইরাল হয়ে যায়। টুইটে দাবি করা হয়েছে, ওই ব্যক্তি কট্টর আরএসএস সমর্থক ও কর্মী। সংখ্যালঘু মুসলিমের বেশ ধরে হিন্দুদের পবিত্র স্থান কলুষিত করার চেষ্টার পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। আটক যুবককে নিয়ে আজমগড়ের রাস্তায় মিছিল বের করা হয় বলেও টুইটে বলা হয়েছে।
বাড়িতে গো-হত্যা করেছেন, এই মিথ্যা রটনার জেরে গত সোমবার রাতে গ্রেটার নয়দার দাদরিতে গণপিটুনিতে নিহত হন বিসরাখা গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ ইকলাক (৫৮)।
তদন্তে জানা গেছে, স্থানীয় মন্দিরের ঘোষণার জেরেই ইকলাখের বাড়িতে চড়াও হয় উন্মত্ত জনতা। পুলিশের দাবি, জেরায় মন্দিরের পুরোহিত স্বীকার করেছেন যে তাকে ওই ঘোষণা দিতে বাধ্য করেছিল দুই যুবক।
জানা যায়, গণপিটুনি ও তার জেরে হত্যার অভিযোগে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে যে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে তাতে গোমাংসের উল্লেখ করা হয়নি। পুলিশের দাবি, খুনের পেছনে গো-হত্যার কারণ দর্শিয়েছিল মারমুখি জনতা। ঘটনায় মোট ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বুধবার এর মধ্যে ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এদিকে, হত্যার ঘটনার জের ধরে গ্রাম ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিহতের পরিবার। একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে গ্রামের আরও ৫০টি সংখ্যালঘু পরিবারও। তাদের দাবি, পুলিশ পাহারায় থাকায় আপাতত এলাকা শান্ত থাকলেও অনিশ্চয়তার আতঙ্কে গ্রামে বসবাস করা সম্ভব হবে না।
এদিকে আজমগড়ের ঘটনা সূত্রে বিচ্ছিন্নতাকামী রাজনীতির পেছনে গেরুয়া শিবিরের (আরএসএস) সক্রিয় ভূমিকার প্রমাণ মিলেছে। যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় বোরখাধারী আরএসএস সমর্থক সংক্রান্ত পোস্টটি পরবর্তীতে মুছে দেওয়া হয়েছে।
ঘটনাটি সত্যি হলে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভুয়া অভিযোগের জেরে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়ানোর জন্য হিন্দু মৌলবাদীদের দিকে আঙুল ওঠা স্বাভাবিক।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।