বিশ্বের সবচেয়ে নবীন ও ছোট দেশ
বিশ্বের সবচেয়ে নবীন ও ছোট দেশ হিসাবে প্রকাশ পেতে যাচ্ছে এনক্লাভার নামে একটি দেশ। এই দেশের আয়তন মাত্র ৯৩ বর্গ কিলোমিটার। বাড়ির পেছনের বাগানও এর চেয়ে বড় হয়। যদি বলা হয়, এটি একটি দেশ হতে যাচ্ছে – লোকজন পাগল তো ভাববেই, গাঁজাখুরি গপ্পের জন্য মারও পড়তে পারে! বিশ্বের সবচেয়ে নবীন ও ছোট দেশ ‘কিংডম অব এনক্লাভা’য় আপনাকে আগাম স্বাগতম।
প্রায় লিখলাম এ কারণে, এটি এখনও স্বীকৃত দেশ হয়ে ওঠার অপেক্ষায়। জনসংখ্যা বর্তমানে শূন্য। এনক্লাভার প্রতিষ্ঠাতারা এখন নাগরিক সন্ধানে ব্যস্ত। এখন পর্যন্ত হাজার পাঁচেক লোক সম্মানসূচক নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছেন। মঞ্জুর হলে অধিবাসীরা ইংরেজি, পোলিশ, স্লোভেনিয়ান, ক্রোয়েশিয়ান ও মান্দারিন ভাষায় কথা বলতে পারবেন। মানে রাষ্ট্রভাষা থাকছে পাঁচটি।
ভৌগলিক অবস্থানে এনক্লাভা উঁকি দিচ্ছে স্লোভেনিয়া-ক্রোয়েশিয়া সীমান্তে। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, স্লোভেনিয়ার রাজধানী মেটলিকার কাছে ও ক্রোয়েশিয়ার রাজধানী জাগরেবের ৫০ মাইল পশ্চিমে।
ব্যাপারটি এমন নয়, কোনো এক রাত শেষে দৈববলে এনক্লাভা এ অবস্থায় এসেছে। আর না এভাবেই রাষ্ট্রের মর্যাদা পেয়ে পাবে। নিশ্চয়ই এর পেছনে কেউ না কেউ রয়েছেন। তেমনি একজন পিতর বাবরজিনকিৎস, এনক্লাভার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।
শোনা যাক তার মুখেই, এমন এক দর্শনে দেশটি গঠিত হতে যাচ্ছে যেখানে ধর্ম-বর্ণ-গোত্রের ঊর্ধ্বে গিয়ে সবাই শুধু মানুষ হিসেবে বিবেচিত হবে। সবার মত প্রকাশের সমান স্বাধীনতা ও অধিকার থাকবে। শিক্ষা হবে বিনামূল্য আর সার্বজনীন।
প্রতিষ্ঠাতাদের অধিকাংশই স্লোভেনিয়া-ক্রোয়েশিয়া সীমান্তবাসী। তাদের দাবি, আলাদা একটি দেশ আমাদের অধিকার। কারণ, এ অঞ্চলটি নিয়ে অন্য দেশগুলোর কোনো দাবি নেই।
চলতি মাসে এরকম ‘মাইক্রো নেশন’ তথা ‘ক্ষুদ্র জাতি’ গঠনে দ্বিতীয় চেষ্টা এটি। প্রথমটিও এনক্লাভার মতো নো ম্যানস ল্যান্ড থেকে উদ্ভব। স্থানীয় ভাষায় যাকে বলে ‘টেরা নালিয়াস’। তবে নতুন দেশগঠনের ক্ষেত্রে সব দিক দিয়ে এনক্লাভাই এগিয়ে। সাধারণত এ জাতীয় ‘মাইক্রো নেশন’গুলো ‘বিশ্বের মধ্যে অন্য বিশ্ব’ হিসেবে প্রচারিত হয়ে থাকে। কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তি ও ইন্টারনেটের যুগে দাঁড়িয়ে এসব ধারণা এখন ধোপে টেকে না।
যাইহোক, হতে পারে ৯৩ বর্গ কিলোমিটার, বাড়ির বাগানের মতোই আয়তন কিন্তু দেশ তো দেশই। আর এনক্লাভা দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে গেলে অন্যসব দেশের মতোই মর্যাদা পাবে। যদিও এখন পর্যন্ত কোনো দেশ একে স্বীকৃতি দেয়নি। কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় তিন লাখ মানুষের পাঠানো নাগরিকত্বের আবেদনের আবেগ কতদিন অগ্রাহ্য করা যায়, এটাই এখন দেখবার বিষয়।
এর মধ্যে তাদের সংবিধান প্রণয়ন করা হয়ে গেছে। বাকি কেবল অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা। এছাড়া স্বাধীন দেশ হতে লাগে পতাকা আর এনক্লাভার পতাকায় শোভা পাবে একটি ঈগল ও সূর্য। সেই সঙ্গে নীতিবাক্য, ‘বাঁচা ও বাঁচতে দেওয়া’!
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।