রামগঞ্জে ফসলি জমিতে ইট পোড়ানোর মহোৎসব
রামগঞ্জ পৌর শহরস্থ মডেল ডিগ্রি কলেজের সামনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ফসলি জমিতে স্থাপিত ১৮টি ইটভাটায় সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে আবাদি জমির টপ সয়েল কাটার পাশাপাশি বনায়ন উজাড় করে কয়লার পরিবর্তে কাঠ, তেলের বর্জ্য, টায়ার ও প্লাস্টিক, বোতামের গুড়া, রাসায়নিক বর্জ্য পোড়ানোর মহোৎসব চলছে। এতে একদিকে খাদ্য শষ্য উৎপাদনে মারাত্মক ব্যাঘাত হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, রামগঞ্জ পৌর শহরস্থ মডেল ডিগ্রি কলেজের সামনে মেসার্স পাটওয়ারী (এমপিবি) ব্রিক্স কয়েক বছর যাবৎ সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে ইট পোড়াচ্ছে। এ ইট ভাটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে হওয়ায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে। এ ছাড়া বিভিন্ন রোগে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আক্রান্ত হচ্ছে। ইট ভাটার কালো ধোয়া ও উত্তাপ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়েছে।
এ ছাড়াও ফসলি জমিতে উপজেলার উত্তর শৈলীরই গ্রামের এমএমবি ব্রিক্স, কাটাখালী এইচটিসি ব্রিক্স, হাজীরপাড়া এমডি এ ব্রিক্স, সুধারাম আব্বাস ব্রিক্স, আল-মদিনা ব্রিক্স, সাকিব ব্রিক্স, আকরতমা মেঘনা ব্রিক্স এণ্ড ম্যানুফ্যাকচারিং, ফাহাদ ব্রিক্স এণ্ড ম্যানুফ্যাকচারিং, ভার্টা এমএসবি ব্রিক্স, লক্ষ্মীধরপাড়া মোতালেব ব্রিক্স, দেহলার মদিনা ব্রিক্স, আজিমপুর জে বি এম ব্রিক্স, পাটওয়ারী ব্রিক্স সহ ১৭টি ইটভাটায় মালিকেরা সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে ভাটায় কয়লার পরিবর্তে কাঠ, টায়ার, তেলের গাদ, বোতামের গুড়া, রাসায়নিক বর্জ্য ও প্লাস্টিক দিয়ে ইট পোড়াচ্ছে।
কয়েকটি ভাটায় শিশু-কিশোরদের দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করানো হচ্ছে। প্রতিটি ইটভাটায় দেখা গেছে ঘনফুট টপ সয়েলের স্তুব। যা বিভিন্ন আবাদি জমিন থেকে বড় চাকার ট্রলি দিয়ে সংগ্রহ করা হয়। বড় চাকার ট্রলি দিয়ে টপ সয়েল বহন করায় পাকা রাস্তাগুলোর প্রায় স্থানে বিশাল গর্ত হয়ে চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে।
স্থানীয় সাংবাদিকরা এ ব্যাপারে বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় একাধিক বার সংবাদ প্রকাশ করলেও পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ও স্থানীয় জেলা-উপজেলা প্রশাসন রহস্যজনক ভাবে নীরব ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
ইটভাটার পাশে বসবাসকারীরা জানান, ইট পোড়ানোর সময় দুর্গন্ধ ও বাতাসে ধুলো কণা ছড়ানোর ফলে বিভিন্ন রোগে তারা আক্রান্ত হচ্ছেন।
ইট ভাটার কয়েকজন মালিক বলেন, গ্রামাঞ্চলে সরকারি প্রজ্ঞাপন মেনে কয়লা দিয়ে ইট পোড়ানো সম্ভব নয়। ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৮৯ ও ২০০১ সালের ১৭নং অনুচ্ছেদের ৪ ও ৫ ধারায় উল্লেখ রয়েছে যে, আবাদি জমিতে কোনও ইটভাটা তৈরি করা যাবে না ও ১২০ ফুট চিমনি ব্যবহার করতে হবে। কাঠ পোড়ানো যাবে না। এখানকার ইটভাটা গুলোতে এ আইন মানা হচ্ছে না।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।