কমলগঞ্জে প্রাইমারী স্কুল নির্মাণে চা বাগান কৃর্তপক্ষের বাঁধা
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার পদ্মছড়া চা বাগানে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণে বাঁধা দিচ্ছে ন্যাশনাল টি কোম্পানীর অধিনস্থ পদ্মছড়া চা বাগান কৃর্তপক্ষ।
বাগানের বাঁধায় ১ বছর ধরে স্কুল নিমার্ণ কাজ বন্ধ রয়েছে। ফলে চা বাগানসহ আশ পাশের ৪টি গ্রামের তিন শতাধিক ছেলে-মেয়ে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। স্কুল নিমার্ণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ইউএনওকে লিখিত পত্র দিয়েছেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়বিহীন এলাকায় ১৫শ প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সরকারের ডিসি খতিয়ানের লিজকৃত কমলগঞ্জ উপজেলার মৃত্তিঙ্গা, দেওড়াছড়া ও পদ্মছড়া চা বাগানে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০১৩ সালে আগস্ট মাসে দরপত্র আহবান মাধ্যমে মৃত্তিঙ্গা, দেওড়াছড়া ও পদ্মছড়া চা বাগান এলাকায় ৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়। প্রতিটি স্কুলে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৯ লাখ টাকা।
ইতোমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মৃত্তিঙ্গা ও দেওড়াছড়া বাগানে প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন কাজ সম্পন্ন করেছে। কিন্তু ন্যাশনাল টি কোম্পানীর আপত্তির কারণে গত এক বছর ধরে মাধবপুর ইউনিয়নের পদ্মছড়া চা বাগানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নিমার্ণ কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। স্কুলের জায়গা নির্ধারণ না করে উল্টো তাদের জায়গায় কোনভাবেই প্রাথমিক স্কুল স্থাপন করা যাবে না বলে আপত্তি দিচ্ছে। ডিসি খতিয়ান ভুক্ত জমি ন্যাশনাল টি কোম্পানি লিজ নিয়েছে। স্কুল নির্মাণ না হওয়ায় চা বাগানের শ্রমিক সন্তান ও বাগানের পার্শ্ববর্তী ভাসানীগাওঁ, বনগাঁও, নোয়াগাওঁ এবং কোনাগাঁও গ্রামের শত শত ছেলে-মেয়েরা শিক্ষা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এই গ্রামের পাশে আর কোন বিদ্যালয় না থাকায় শিশুরা স্কুলমুখী হচ্ছে না। তারা বিভিন্ন শিশুশ্রমে জড়িয়ে পড়ে শিক্ষার আলোর মুখ দেখছে না।
এলাকাবাসী জানান, চা বাগান কর্তৃপক্ষ অহেতুক বিদ্যালয় নিমার্ণে বাঁধা দিচ্ছে। সরকারের মহৎ উদ্যোগ বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে। এলাকার সন্তানরা যাতে লেখাপড়া সুযোগ না পায় তার জন্য এটা করা হচ্ছে। ঠিকাদার মোঃ জুয়েল আহমেদ জানান, স্কুলটি নিদিষ্ট সময়ে নির্মাণ করতে না পারলে সরকারের বরাদ্ধকৃত অর্থ ফেরত চলে যাবে এবং তিনি আর্থিক ক্ষতিসম্মুখীন হবেন। স্কুল নির্মাণে বাগান কর্তৃপক্ষের বাঁধার কারণে উপজেলা শিক্ষা অফিসার, মাধবপুর ইউপি চেয়ারম্যান, বাগান পাঞ্চায়েত কমিটি ও এলাকাবাসী পৃথকভাবে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট আবেদন দিয়েছেন। আবেদনে শিক্ষা বঞ্চিত শিশুদের শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে অবিলম্বে স্কুল নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য দাবি জানানো হয়।
বিদ্যালয় স্থাপনে আপত্তি প্রসঙ্গে ন্যাশনাল টি কোম্পানীর ম্যানেজিং ডিরেক্টর) এমডি মো. জিয়াউল হাসান জানান, এখানে ভুল বুঝাবুঝির কোন অবকাশ নেই। আমরা সরকারের পক্ষে ডিসি অফিস থেকে চা বাগানের জন্য লিজ নিয়েছি। এই স্থানে অন্য প্রতিষ্ঠান স্থাপন করতে নির্ধারিত জমির খারিজ ও অনুমোদন নিয়ে প্রতিষ্ঠান করতে কোন আপত্তি নেই।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিয়া বলেন, পদ্মছড়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।