পুনঃময়নাতদন্ত শেষে লোপার লাশ ফের দাফন
হুমায়ূন আহমেদের ধারাবাহিক নাটক ‘এইসব দিনরাত্রি’র টুনি চরিত্রের অভিনেত্রী নায়ার সুলতানা লোপার লাশ পুনরায় ময়নাতদন্তের পর আবার দাফন করা হয়েছে।
তবে এবারো লোপার মৃত্যুর ‘সঠিক কারণ’ জানা সম্ভব হবে কি-না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন লোপার মা রাজিয়া সুলতানা।
তার আবেদনেই বৃহস্পতিবার ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে রাজধানীর বনানী কবরস্থান থেকে লোপার লাশ উত্তোলন করা হয়।
শুক্রবার সকাল ৯টায় মিটফোর্ড হাসপাতালে লোপার দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্ত শেষে বেলা ১২টার দিকে বনানীতে আবার তাকে দাফন করা হয় বলে জানান রাজিয়া।
পুনরায় ময়ন্তদন্তের জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান হিসাবে ছিলেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান পলক কুমার চক্রবর্তী।
তিনি বলেন, “মেডিকেল বোর্ডে ঢাকা মেডিকেলের একজন চিকিৎসক ছিলেন। ঢাকা মেডিকেলের ময়নাতদন্ত নিয়ে আমার আপত্তি ছিল। কিন্তু এখানেও ঢাকা মেডিকেলের এক শিক্ষককে আমি দেখেছি। তাই এবারের ময়নাতদন্তেও ভাল কিছু পাব এমন আশা আমি করছি না।”
গত ১৬ অক্টোবর রাজধানীর গুলশানে শ্বশুরবাড়ি থেকে ৩৫ বছর বয়সী লোপার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার হয়।
ওইদিনই তার মা রাজিয়া সুলতানা গুলশান থানায় লোপার স্বামী আলী আমিনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন, যাতে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়। এতে আমিনের বাবা-মাকেও আসামি করা হয়।
লাশ উদ্ধারের পর পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে লোপার গলার ডানে এবং বাম হাতের কবজিতে আঘাতের চিহ্ন পাওয়ার কথা বলা হয়।
এরপর ময়নাতদন্তে লোপার মৃত্যুর কারণ ‘আত্মহত্যা’ বলা হলে তাতে আপত্তি জানিয়ে পুনরায় ময়নাতদন্তের আবেদন করেন তার মা।
গত ২৬ নভেম্বর ওই আবেদন গ্রহণ করে লোপার লাশ তুলে পুনরায় ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করতে ঢাকার জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেয় আদালত।
লাশ তোলার জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠনসহ একজন নির্বাহী হাকিমকেও রাখতে বলা হয়।
১৬ অক্টোবর লোপার মায়ের মামলার পরপরই আমিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি দাবি করেছেন, গুলশানের ফ্ল্যাটের মালিকানা নিয়ে তার সঙ্গে ঝগড়ার জেরে লোপা আত্মহত্যা করেছেন। আর তখন তিনি বাড়ির বাইরে ছিলেন।
তবে মামলার এজাহারে লোপার মা তার মেয়ে জামাইকে ‘মাদকাসক্ত’ উল্লেখ করে বলেছেন, প্রতিদিন লোপাকে শারীরিক নির্যাতন করতেন আলী আমীন এবং এতে তার বাবা-মাও প্রশ্রয় দিতেন।
এজাহারে বলা হয়, ঘটনার দিন দুপুর আড়াইটা থেকে ৩টার মধ্যে কোনো এক সময় তারা তিনজন লোপাকে ‘শ্বাসরোধে’ হত্যার পর ‘সিলিং ফ্যানে ঝুলিয়ে’ রাখেন।
লোপা নব্বইয়ের দশকে বিটিভিতে প্রচারিত ‘এইসব দিনরাত্রি’ নাটকে ‘টুনি’ চরিত্রে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন।
নাটকের শেষ পর্যায়ে ‘টুনি’ অসুস্থ হয়ে পড়লে সারা দেশের অসংখ্য মানুষ হুমায়ূন আহমেদের কাছে চিঠি লিখে তার প্রাণ রক্ষার আবেদন জানান।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।