বুধবার ঠিক কখন ঐ তিন কিলোমিটার লম্বা ট্রাকের বহর প্রায় দু'হাজার টন সামগ্রী নিয়ে ইউক্রেন সীমান্তে পৌঁছবে, তা জানা নেই। ট্রাকগুলো চলেছে ইউক্রেনের লুগানস্ক অঞ্চল অভিমুখে, যেখানে হাজার হাজার বেসামরিক বাসিন্দা বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ভেঙে পড়া সত্ত্বেও অবস্থান করছেন।

ইউক্রেন সংঘাতে রাশিয়া ঠিক কী ভূমিকা পালন করছে, অথবা রাশিয়া বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাহায্য করছে কি না – এ সব প্রশ্নের জবাব আজও অজ্ঞাত। রাশিয়ার সর্বাধুনিক ‘এইড কনভয়'-তেও অস্ত্রশস্ত্র পাঠানো হচ্ছে কিনা, সে ব্যাপারে কিয়েভ ও পশ্চিমা দেশগুলির স্বভাবতই সন্দেহ আছে। এবার হয়তো তার উত্তর পাবার সময় এসেছে – যদি মস্কো, কিয়েভ এবং রেড ক্রসের মধ্যে এই এইড কনভয় সংক্রান্ত সমঝোতার খবরটা ভুয়ো না হয়ে থাকে। অন্তত রুশ মিডিয়ায় এখনও জোরগলায় সেই সমঝোতার দোহাই দেওয়া হচ্ছে।

ইউক্রেন সীমান্তে ঐ ত্রাণ সামগ্রী পরীক্ষা করার অধিকার দাবি করছে – কিন্তু কোন সীমান্তে? অথবা সীমান্তের কোন অংশে, কোন ট্র্যানজিট পয়েন্ট কিংবা চেকপয়েন্টে? এ কথাও তো সত্যি যে, রুশ-ইউক্রেনীয় সীমান্তের অন্তত ১০০ কিলোমিটার অংশ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, এইড কনভয়ের রুট কিয়েভের সঙ্গে একত্রে ঠিক করা হয়েছে। ট্রাকের বহর নাকি রাশিয়ার শেবেকিনো শহরের কাছে ইউক্রেনের সরকার-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ঢুকবে। কিন্তু কনভয় তো আরো পূর্বমুখী যাত্রাপথ ধরে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত অংশে সীমান্ত পার হতে পারে – অন্তত সেরকম একটা বিপদ আছে বৈকি।

তাহলে এ ভাবে ঢ্যাঁড়া পিটিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কাছে ত্রাণ পাঠানোর অর্থ কী? কী করতে চায় মস্কো? পুরো উদ্যোগটাই কি কোনো আসন্ন সামরিক হস্তক্ষেপের পূর্বাভাস? ট্রাকগুলোকে সযত্নে সাদা রং করা হয়েছে কি সেটা শান্তির রং বলে? ওদিকে ইউক্রেন সরকার এই ত্রাণ অভিযান মানেন না। রেড ক্রস বলছে, তারা এই ত্রাণ অভিযানকে সবুজ সংকেত দেয়নি। তাহলে কোন মায়াবলে সুবিশাল ট্রাকগুলোর চাকা ইউক্রেনের দিকে ঘুরে চলেছে?

পশ্চিমের আশঙ্কা হল, রাশিয়া এই পন্থায় – ক্রাইমিয়া বাদ দিলে, এই প্রথম – ইউক্রেন সংঘাতে তাদের বাস্তব, শারীরিক উপস্থিতি দেখাতে চলেছে। সেটা সাময়িক, না দীর্ঘস্থায়ী, সেটাই হল প্রশ্ন।