- হোম
- >
- ইতিহাস-ঐতিহ্য
- >
- দুর্গাসাগর দীঘি
দুর্গাসাগর দীঘি
চন্দ্রদ্বীপের রাজা শিবনারায়ণের মৃত্যুর পর তার পুত্র লক্ষ্মীনারায়ণ রাজত্ব লাভ করেন (১৭৭৭ খ্রিঃ)। অল্পকাল পরে লক্ষ্মীনারায়ণের মৃত্যু হয়। রানী দুর্গাবতী তখন গর্ভবতী ছিলেন। ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দে রানী দুর্গাবতী চন্দ্রদ্বীপ রাজ্যের সাত লাখ টাকা রাজস্ব পরিশোধ করে রাজ্যের সনদ নবায়ন করান। ওই সময়ও তাঁর সন্তানের জন্ম না হওয়ায় দুর্গাক্রোড় নারায়ণের নামে সনদ নেওয়া হয়।
এ কারণে পরবর্তীকালে রানীর ছেলে রাজা জয়নারায়ণের আরেক নাম রাখা হয় দুর্গকুর নারায়ণ। জয়নারায়ণ শিশু থাকায় রানী দুর্গাবতী রাজ্য পরিচালনা করতেন। রানী দুর্গাবতী এক জন বুদ্ধিমতী ও প্রজাবৎসল মহিলা ছিলেন। তিনি ১৭৮০ খ্রিস্টাব্দে রাজধানী শ্রীনগরে (মাধবপাশা) দুর্গাসাগর দীঘি খনন করান। কথিত আছে ১৩ দ্রোণ বা ৬১ কানি ভুমির ওপর ওই দীঘিটি খনন করা হয়।
দীঘির পশ্চিমে শ্রীপুর, পূর্বে কলাডেমা, উত্তরে পাংশা এবং দক্ষিণে শোলনা ও ফুলতলা গ্রাম। চন্দ্রদ্বীপ রাজ্যের বিভিন্ন গ্রামের লোকজন দীঘি খননে অংশ নেয়। দীঘিটির খননকাজ শেষ করতে ছয় মাস সময় লাগে। শ্রমিকরা সারা দিনের কাজের শেষে পশ্চিম পাশে আরেকটি দীঘিতে কোদাল পরিস্কার করত। ওই দীঘির নাম হয় কোদাল-ধোয়া দীঘি। দুর্গাসাগর দীঘিটি খননে খরচ হয় তিন লাখ টাকা। উজিরপুরের কর্মকাররা এ দীঘি খননের জন্য কোদাল তৈরি করে। দীঘির চার পাড়ে ৫০ ফুট বিসতৃত চারটি পাকা ঘাট নির্মাণ করা হয়। ১৯৭৫ সালে তৎকালীন মন্ত্রী আবদুর রব সেরনিয়াবাত ওই দীঘিটি পুনরুদ্ধার ও সংস্কার করান।
হুসেন শাহী আমলে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নিদর্শন পদ্মপুরাণ বা মনসা-মঙ্গল। বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি বিজয় গুপ্ত ওই আমলে রচনা করেন মনসা-মঙ্গল বা পদ্মপুরাণ। বিজয় গুপ্ত ১৪৫০ খ্রিস্টাব্দে বাকলা-চন্দ্রদ্বীপের ফুল্লশ্রী গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতা সনাতন কোটালীপাড়ার অধিবাসী ছিলেন।
বাকলা অঞ্চলে সেন আমল হতে মনসার পূজা প্রচলিত ছিল। কবি বিজয় গুপ্ত দেবী মনসার ভক্ত ছিলেন। মনাসা-মঙ্গল কাব্যের স্বপ্নাধ্যায়ে তিনি উল্লেখ করেন, মনসা দেবী কর্তৃক স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে তিনি মনসা-মঙ্গল বা পদ্মপুরাণ কাব্য রচনা করেন। কথিত আছে ওই কাব্য রচনার আগে তিনি স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে গৈলার মনসাবাড়ির দীঘি হতে মনসা পূজার ঘট ও কোষা উদ্ধার করেন। (চলবে)
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।