- হোম
- >
- আইন-মানবাধিকার
- >
- দীঘিনালা গ্রেপ্তারের আতঙ্কে পুরুষ শূন্য এলাকা
দীঘিনালা গ্রেপ্তারের আতঙ্কে পুরুষ শূন্য এলাকা
খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যকার হামলা পাল্টা হামলার ঘটনায় আতঙ্কের জনপদে পরিনত হয়েছে দীঘিনালার কবাখালী বাজার। মামলা, অব্যাহত হুমকি, বিচ্ছিন্ন হামলার কারণে কবাখালী বাজারের অধিকাংশ দোকান বন্ধ রেখে এলাকা ছেড়েছে বিএনপি দলীয় অনেক নেতা-কর্মীরা। বিশেষ করে কবাখালী দুই-তিন গ্রাম গ্রেপ্তার আতঙ্কে পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে।
অপরদিকে আওয়ামী লীগের ওপর হামলায় প্রত্যক্ষ জড়িত অনেককে মামলা থেকে বাদ দিয়ে ব্যক্তি আক্রোশের কারণে নিরীহ মানুষকে আসামি করার অভিযোগ তোলছে খোদ আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরাই। এ নিয়ে রয়েছে চরম অসন্তোষ।
ঘটনার পর থেকে বিক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিচ্ছিন্নভাবে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি কর্মীদেরকে মারধর, হামলা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুরের অভিযোগ রয়েছে বিএনপির পক্ষ থেকে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কবাখালী বাজারের অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই বন্ধ রয়েছে। কবাখালী বাজারের বন্ধ দোকানগুলোর সামনে অলস সময় কাটাচ্ছে পাহারারত পুলিশ সদস্যরা। বাজারে লোকজনের উপস্থিতি তেমন নেই বললেই চলে। স্থানীয় একাধিক লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ক্ষমতাসীন দলের কিছু শৃংখল কর্মীদের হুমকির কারণে দোকানপাট খুলতে পারছেনা বিএনপি দলীয় মতাদর্শের ব্যবসায়ীরা।
দীঘিনালার বিএনপি নেতা ও মেরুং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার পর থেকেই দীঘিনালার বিভিন্ন স্থানে তান্ডবলীলা চালিয়ে যাচ্ছে সরকারী দলের নেতাকর্মীরা। প্রতিদিনই বিচ্ছিন্নভাবে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়ে বিএনপি কর্মীদেরকে মারধর, হামলা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর, লুটপাট ও হুমকি-ধমকিও অব্যাহত রেখেছে। দীঘিনালার তিন শতাধিক নেতাকর্মী মামলা আর অব্যাহত হামলার ভয়ে এলাকা ছাড়া রয়েছে বলেও জানান তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যবসায়ী ও আতঙ্কে এলাকা ছাড়া লোকজন জানান, ঘটনার পর থেকে স্থানীয় যুবলীগ নেতা হাফিজ এবং সাইফুল ইসলাম হুমকি দিয়ে বলেছে, কোন বিএনপির দোকান খোলা যাবে না। তাদের হুমকি-ধমকিও ও ভীতির কারণেই বিএনপি সমর্থন ব্যবসায়ীরা কেউ দোকান খুলতে পারছেনা।
অন্যদিকে উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নওশাদ আলীর নেতৃত্বে একদল যুবক গভীর রাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের খুঁজে এবং পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিয়ে আসছে।
জানা গেছে, গত শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটার কবাখালীর মুসলিম পাড়ায় ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল খালেকের ভাইয়ের বাড়িতে গিয়ে মুখোশ পড়া একদল যুবক খালেককে খুঁজতে থাকে। মুখোশধারী যুবকদের দেখে গৃহবধু সুবর্ণা আক্তার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। একই রাতে নওশাদের নেতৃত্বে একদল যুবক কবাখালীর উত্তর মিলনপুর শিবিরে গিয়ে চান মিঞা ওরফে চান্দু মেম্বারকে খুঁজতে থাকলে পুরো গ্রামে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
তখন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম রাজুর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। জাহাঙ্গীর আলম রাজু বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এলাকায় স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
অপরদিকে কবাখালীর ঘটনাকে পুঁজি করে যুবলীগ নেতা নওশাদের বিরুদ্ধে সাবেক ছাত্রলীগ সদস্য রফিকুল ইসলাম, সৈনিক লীগের মহসিনসহ বেশ কয়েকজনকে মারধরের অভিযোগ থাকলেও নওশাদ এসব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন।
প্রসঙ্গত, গত ৬ আগষ্ট রাতে দীঘিনালার কবাখালী ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আজিজুল হকের উপর হামলার জের ধরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগ কর্মীদের উপর হামলা চালালে দুই পক্ষের মধ্যে সৃষ্ট সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২৪ নেতাকর্মী আহত হয়।
এ ঘটনায় কবাখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মো. জামাল হোসেন বাদি হয়ে বিএনপির ৩৪ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে আরো ১৫/২০জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে দীঘিনালা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. মোসলেম উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মো. আবু তালেবকেও আসামি করা হয়।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।