বাংলাদেশ শান্তি পরিষদ হিরোশিমা দিবস উপলক্ষে আজ বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাব কনফারেন্স লাউঞ্জে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।

 

সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ও বিশ্ব শান্তি পরিষদের সহ-সভাপতি মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম. এম. আকাশ। আলোচনা অংশগ্রহণ করেন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, বরেণ্য সাংবাদিক-সাহিত্যিক ও শান্তি আন্দোলনের নেতা কামাল লোহানী; সাবেক আইন মন্ত্রী ও সংসদের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুল মতিন খসরু এমপি; বিশিষ্ট কুটনীতিক মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের পরিচালক ও ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী; সাবেক শিল্প মন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া; শান্তি আন্দোলনের অন্যতম নেতা ড. রফিকুল ইসলাম। সভা পরিচালন করেন সংগঠনের সম্পাদক মাহবুবুল্ ইসলাম।

 

অধ্যাপক এম. এম. আকাশ তার প্রবন্ধে লেখক নোয়াম চমস্কির উদ্ধৃতি “আমি বলেছিলাম হিরোশিমা ও নাগাসাকি ইতিহাসের সবচেয়ে অকথ্য অপরাধগুলির মধ্যে অন্তর্ভূক্ত” দিয়ে বলেন সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ তার শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করার জন্য দুই লক্ষ সাধারণ মানুষ হত্যা এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ চিরতরে পঙ্গু করে দিয়েছিল। তিনি আরও উল্লেখ করেন জাতিসংঘের হিসাব অনুসারে শুধুমাত্র ২০১০ সালে বিশ্বব্যাপী মিলিটারি ব্যায় ১.৫ ট্রিলিয়ন ডলার দিয়ে বাংলাদেশের ১৫ কোটি মানুষকে পুরো ১০ বছর ধরে খাইয়ে দাইয়ে ভাল ভাবেই চালানো সম্ভব।

 

সভাপতির বক্তব্যে জনাব মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু বলেন, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে আনবিক বোমা নিক্ষেপ করে মানব জাতিকে পরাভূত করতে চেয়েছিল। কিন্তু ১৯৭১ সালে বাংলার মানুষ প্রমাণ করেছে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করলে তাকে পরাভূত করা সম্ভব। ভিয়েতনাম থেকে তাদেরকে লেজ গুটিয়ে পালাতে হয়েছে। আজ প্যালেস্টাইনে যা ঘটছে তার জন্য মার্কিন সাম্রাজ্যবাদই দায়ী। তাদের প্রত্যক্ষ মদদেই ইসরাইল এধরণের গণহত্যা করার সুযোগ পাচ্ছে। তিনি ন্যামের সকল নেতৃবৃন্দকে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবার জন্য আহ্বান জানান।

 

কামাল লোহানী বলেন, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ সেদিন যেভাবে নিরপরাধ মানুষ হত্যা করেছিল, ১৯৭১ সালে সেই ভাবে আমাদের হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়নের ভেটোর ফলে তাদের সেই নীল নকশা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। সেই মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ আজ প্যালেস্টাইনে জায়নবাদি ইসরাইলী হামলার মদদ দিয়ে মানুষ হত্যা করছে। আর তারা মানবতার কথা বলে সাধারণ মানুষকে ধোকা দিচ্ছে।

 

ডা. সারওয়ার আলী বলেন, হিরোশীমায় যে পারমানবিক বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছিল তার তেজস্কৃয়তা থেকে জাপান আজও মুক্ত হতে পারেনি। তিনি সকল ধরণের মারনাস্ত্র উৎপাদন ও ব্যবহার বন্ধের জন্য শান্তি কামী মানুষকে ঐক্যবন্ধ ভাবে আন্দোলন করার আহবান জানান।

 

ড. রফিকুল ইসলাম বলেন, সাম্রাজ্যবাদ কাগুঁজে বাগ। তাদের বিরুদ্ধে বিশ্বের শান্তিকামী মানুষকে ঐক্যবন্ধ হয়ে আন্দোলন করতে হবে।