ধর্ষিতার সামাজিক ধর্ষণ
মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার পূর্ব-বাড়ৈখালী গ্রাম থেকে ধর্ষণের শিকার এক কলেজছাত্রী গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। নতুন কিছু না। ধর্ষিত যে হয় তার অবধারিত পরিণতি হচ্ছে মৃত্যু। মরে তাকে যেতেই হবে। নয়তো পালাতে হবে, হারিয়ে যেতে হবে। রাস্তার ধারে পড়ে থাকা মরণাপন্ন পচা গলা ঘা উঠা নেড়ি কুকুরের দিকে মানুষ যতটুকু ঘৃণা ভরে তাকায়, পারলে বমি উগড়ে দেয় এমন অবস্থা, ধর্ষিত একটা মেয়েকেও দেখা হয় ততটুকুই অচ্ছ্যুত হিসেবে।
পরিবার থেকে শুরু করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কর্মস্থল, রাস্তাঘাট যেখানেই যাক না কেন, লোকে আঙুল দেখিয়ে বলবে, ঐ মেয়েটাকে রেপ করা হয়েছে। কেউ খুব সহানুভূতির স্বরে এসে জানতে চাইবে, কোথায় হাত দিয়েছিল, বুক টিপে দিয়েছে কিনা, যোনীতে শিশ্ন প্রবেশের সময় কেমন লেগেছে, কতক্ষণ ধরে করেছে ইত্যাদি নানা অশ্লীল প্রশ্ন। যেন বারবার তাকে স্মরণ করিয়ে দেয়া সেই বীভৎস ঘটনার কথা। তার মাথার ভেতরে নিজেদের ক্লেদাক্ত কথাগুলো ঠেসে দেয়া, তুমি ধর্ষিতা! অতঃপর ধর্ষিতা সেই নারী বারবার ধর্ষণের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে একবার ধর্ষিত হওয়ার গ্লানি কাঁধে নিয়েই মরণকে আপন করে নেয়।
বড্ড ইচ্ছে করে, এদেশে ধর্ষক নামক নরপশুগুলোকেও মানুষ রাতদিন আঙুল দেখিয়ে বলুক, ঐ যে যায় পিশাচটা। মেয়ের বয়সী একটা মেয়েকে যে ধর্ষণ করেছে। থু থু ছুঁড়ে দিক তার দিকে। অতঃপর মানুষের ঘৃণায় অপরাধবোধের যন্ত্রণায় দগ্ধ হয়ে হয়ে, একেকটা নরপশু বেছে নিক আত্মহত্যার পথ। ধর্ষক মুক্ত হোক সমাজ।
লেখক: সাংবাদিক ও সংস্কৃতি কর্মী.
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।