শর্ত পূরণে বাংলাদেশের পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়
পোশাক শিল্পে পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। এর কারণ হিসেবে পোশাক শিল্প খাতে বেশ কিছু বড় বড় দুর্ঘটনাকে দায়ী করছেন গার্মেন্টস মালিকেরা। যার ফলে নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না পারায় বাংলাদেশী পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা হারিয়েছে বাংলাদেশ।
পোশাক শিল্পক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় আঘাত দু'টি হলো, আশুলিয়ার তাজরীন ফ্যাশন্স-এ অগ্নিকাণ্ড এবং গত বছরের রানা প্লাজা ধ্বস। এক রানা প্লাজা ধ্বসেই প্রায় ১৩ শতাধিক শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর গত বছরেই যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জিএসপি (শুল্কমুক্ত পণ্য) সুবিধা বন্ধ করে দেয়। তারা জানায়, কারখানা ভবনগুলোর কাঠামোগত উন্নয়ন, ভবনের আগুন প্রতিরোধক ব্যবস্থা, শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রের পরিবেশের উন্নয়ন, শ্রমিকদের সংগঠিত করা এবং তাদের প্রাপ্য যাবতীয় সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করলেই যুক্তরাষ্ট্র আবার বাংলাদেশের জন্য জিএসপি সুবিধা চালু করবে।
এদিকে বাংলাদেশকে দেওয়া শর্তসমূহের কিছু পূরণ হলেও তা জিএসপি সুবিধা ফেরত পাবার জন্য যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম মন্ত্রণালয়।
গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র সিনেট-এর বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ের কমিটির এক শুনানি-তে যুক্তরাষ্ট্রের 'ব্যুরো অব ইন্টারন্যাশনাল লেবার এফেয়ার্স'-এর ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি এরিক বিয়েল জানান, শুল্কমুক্ত পণ্যের সুবিধা ফিরে পাওয়ার জন্য বাংলাদেশকে আরও কাজ করে যেতে হবে।
ঐ দেশের বাজারে জিএসপি সুবিধা পুণর্বহাল হতে পারে কি না, সে ব্যাপারে মে মাসে শুনানি হবে। সেই শুনানির ৩ মাস আগেই গত মঙ্গলবার সিনেট কমিটি -'বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সমঝোতা ও শ্রমিক অধিকার পরিস্থিতি' অনুষ্ঠিত হল।
'ক্যাপিটল হিল'-এর 'সিনেট ডার্কসেন ভবন'-এ ঐ কমিটির চেয়ারম্যান রবার্ট মেনেনদেজ-এর সভাপতিত্বে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পখাতের অবস্থাসহ বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা এবং ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়েও কথা হয়।
শুনানিতে বিয়েল জানান, শর্ত পূরণ করতে গত বছরের জুলাই মাসে 'বাংলাদেশ শ্রম আইন' সংশোধন করার পরেও শ্রমিকদের সিবিএ করার ওপর বিধিনিষেধ শিথিল করাসহ কর্মপরিকল্পনার কিছু বিষয় আমলেই নেওয়া হয় নি। এজন্য জিএসপি সুবিধা দেওয়ার জন্য সেদিকে নজর রাখবে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্তে খুব বেশি ক্ষতি হয় নি বাংলাদেশের। কারণ বাংলাদেশের বাৎসরিক ৫০০ কোটি ডলারের রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য বিক্রি হত মাত্র এক শতাংশ। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের প্রভাব ইউরোপিয়ান দেশগুলোর ওপরে পড়লে বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্য একটা বড়সর বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অর্তনীতিবিদরা। কারণ ইউরোপের প্রায় অর্ধেক দেশেই বাংলাদেশ জিএসপি সুবিধা পেয়ে আসছে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।