বুকের দুধ ফেলে দিতে বাধ্য হলেন মা
নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে সন্তানের জন্য সংরক্ষণ করা মায়ের বুকের দুধ ফেলে দিতে বাধ্য করেছে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। ভুক্তভোগী ওই মায়ের নাম জেসিকা কোয়াকলে মার্টিনেজ। তিনি একজন মার্কিন নাগরিক।
ফেইসবুকে পোস্ট করা এক খোলা চিঠিতে ওই মা, মার্কিন নাগরিক জেসিকা কোয়াকলে মার্টিনেজ তার হতাশার কথা তুলে ধরেছেন, জানিয়েছে বিবিসি।
এ ঘটনায় তিনি ‘লাঞ্ছনা’ বোধ করেছেন বলে জানিয়েছেন মার্টিনেজ। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘তোমরা আমার ছেলের প্রায় দুই সপ্তাহের খাবার ফেলে দিতে বাধ্য করেছো।’
চাকরির প্রয়োজনে মার্টিনেজকে ১৫ দিন সন্তানের কাছ থেকে দূরে থাকতে হবে বিধায় তিনি তার আট মাসের শিশু সন্তানের জন্য বুকের দুধ সঞ্চয় করে রেখেছিলেন। কিন্তু জমানো ও কন্টেইনারে বহন করা ওই দুধ ফেলে দিতে বাধ্য করে হিথ্রো কর্তৃপক্ষ।
হিথ্রো বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিমানের যাত্রীরা কী পরিমাণ তরল বহন করতে পারবেন সে বিষয়ে যুক্তরাজ্য সরকারের বেধে দেওয়া নিয়ম তাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে।
যুক্তরাজ্যের পরিবহন বিভাগের ওই নিয়মে বলা হয়েছে, একশ মিলিলিটার বা তার কম তরল কন্টেনাইরে করে স্বচ্ছ এবং পুনরায় বন্ধ করা যায় এ রকম একটি ব্যাগে বহন করতে হবে।
ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, শিশু খাদ্য ও শিশুদের দুধের ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম করা যাবে কিন্তু যাত্রীর সঙ্গে তার শিশু থাকতে হবে। এতে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত তরল যাত্রী সঙ্গে করে ক্যাবিনে নিতে পারবে না, অন্যান্য লাগেজের সঙ্গে নিতে হবে।
মার্টিনেজ লিখেছেন, তিনি ওই নিয়মগুলো দেখেছিলেন, কিন্তু মায়ের সঙ্গে শিশু না থাকলে বুকের দুধ নিতে পারবেন না এটি ‘অবিশ্বাস্য অবিচার এবং আমার মতো অন্যান্য কর্মজীবী মায়ের বিষয় বিবেচনায় এটি বর্জনীয়’।
তিনি বলেন, ‘যদি রাগত আচরণ করে থাকি, তা এই কারণে নয় যে আমি উপযুক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারছি না। এটা এই কারণে যে আমার সমস্ত প্রচেষ্টা সত্বেও কাজের সময় আমি আর ছেলেকে যথেষ্ট দুধ দিতে পারছি না।
‘কর্মজীবী মা হওয়ার কারণে আমি জানি কাজ এবং সন্তান উভয়ের প্রয়োজন মেটানো কতোটা কঠিন, কিন্তু একটি বিকেলেই তোমরা আমার জন্য সেটি অসম্ভব করে দিয়েছ।
‘নিরাপত্তা অগ্রাধিকার পাবে, কিন্তু এটাই একমাত্র কর্তব্য হওয়া উচিত না এবং এর মাধ্যমে যাদের রক্ষা করার চেষ্টা করছ তাদেরই শাস্তি দেওয়া উচিত না।
‘আমার সন্তানের মুখ থেকে শুধু খাবারই কেড়ে নাওনি তোমরা, আমাকে লাঞ্ছিত করেছো এবং আমাকে একজন কর্মজীবী ও একজন মা হিসেবে সম্পূর্ণ পরাজিত হওয়ার অনুভূতিতে ফেলেছো।’
২০০৬ সালে সাতটি ট্রান্স-আটলান্টিক এয়ারলাইন্সে তরল বিস্ফোরক ব্যবহার করে বিস্ফোরণ ঘটানোর সন্ত্রাসী প্রচেষ্টার পর থেকে যুক্তরাজ্যের বিমানবন্দরগুলোতে হ্যান্ড-ল্যাগেজে তরল বহনের বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।