বাজেটে ৫০০ কোটি বরাদ্দের দাবি দলিতদের
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রকাশ : ২১ এপ্রিল, ২০১৬
প্রিন্টঅঅ-অ+
আগামী জাতীয় বাজেটে দেশের ৭০লাখ দলিত জনগোষ্ঠীর জন্য ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার দাবি জানিয়েছেন আলোচনা সভার বক্তরা।
বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা শারি, বাংলাদেশ দলিত নারী আন্দোলন এবং বাংলাদেশ দলিত এন্ড মাইনরিটি হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার ফোরামের আয়োজনে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত ‘বাজেটে দলিত জনগোষ্ঠীর জন্য ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দের’ দাবিতে অনুষ্ঠিত মত বিনিময় সভায় অতিথিবৃন্দ এ কথা বলেন।
বক্তারা বলেন, বর্তমান সরকার জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবার সরকার। এই সরকারের কাছে দলিত বা অন্য সম্প্রদায় আলাদা কোন জাতিগোষ্ঠী নয়। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা সবার জন্য সমান। তারপরেও দলিত এই জনগোষ্ঠী সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম থেকে দুরে থাকার কারনে তাদের জন্য আলাদা বাজেট বরাদ্দ থাকা উচিত। যে বাজেট থেকে শুধুমাত্র এই জনগোষ্ঠীরই উন্নয়নমূয়লক কাজ করা যেতে পারে। দলিত জনগোষ্ঠির ওপর আরোপিত অসমতা ও বৈষম্য নিরসরণের কোন দিক নির্দেশনা জাতীয় বাজেটে নেই।
তাঁরা বলেন, বাংলাদেশের অসম সমাজ কাঠামোয় ‘জাতি-বর্ণ প্রথা’ স্থায়ী রূপে বিদ্যমান থাকার প্রধান শিকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায় তথা দলিত ও হরিজন জনগোষ্ঠী; যারা মানবাধিকার লঙ্ঘণ, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের প্রথম সারির ভূক্তভোগি। সামাজিক-সাংস্কৃতিক কারনে দলিত জনগোষ্ঠির ওপর আরোপিত অসমতা ও বৈষম্য নিরসরণের কার্যকর কোন দিক নির্দেশনা জাতীয় বাজেটে নেই। অন্ত্যজ বা দলিত জনগোষ্ঠীর সঠিক পসিংখ্যান না থাকায় বাজেট বরাদ্দে উপেক্ষিত ও বৈষম্যের শিকার অতিদরিদ্র এই দলিত জনগোষ্ঠী। বাংলাদেশের দলিত ও হরিজন জনগোষ্ঠী দীর্ঘকাল সময় থেকে সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচী থেকে বঞ্চিত। বেসরকারি হাতে গোনা কয়েকটি সংগঠণ তাদের জন্য সামান্য বাজেটে ছোট ছোট কিছু কাজ করছে।
সমাজ সেবা অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরের জাতীয় বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কার্যক্রমের আওতায় দলিত, হরিজন ও বেদে জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের জন্য ৯ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা। এই বরাদ্দ যদি ৭০ লক্ষ দলিত ও হরিজন জনগোষ্ঠীকে বন্টন করা হয়, তাহলে বাৎসরিক মাথাপিছু বরাদ্দ হয় ১৩.১৮ টাকা মাত্র। আর এই বাৎসরিক বরাদ্দকে যদি দৈনিক হারে বন্টন করা হয় তাহলে মাথাপিছু দৈনিক বরাদ্দ হয় শুধুমাত্র ০.০৩৬ টাকা। এতে অনগ্রসর শ্রেণির মধ্যে আরও অনগ্রসর হলো দলিত হরিজন জনগোষ্ঠী। সুতরাং দলিত হরিজন জনগোষ্ঠীর জন্য এই বাজেট বরাদ্দ খুবই নগন্য এবং এটি দলিত হরিজন জনগোষ্ঠীর সাথে প্রহসন ছাড়া আর কিছু নয়।
বাংলাদেশ দলিত এন্ড মাইনরিটি হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার ফোরামের সভাপতি রনিত লাল এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রফেসর মেসবাহ কামাল, দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান, গবেষক প্রতিমা পাল মজুমদার, আইসিডিডিআরবির জেন্ডার এন্ড ডাইভারসিটি স্পেশালিস্ট ফারজানা শাহনাজ মজিদ, শারি’র নির্বাহী পরিচালক প্রিয় বালা বিশ্বাস। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ দলিত পঞ্চায়েত ফোরামের সভাপতি রামানন্দ দাস, বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদের মহাসচিব নির্মল চন্দ্র দাস, বাংলাদেশ দলিত নারী আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মুক্তা রানী দাস, শারি’র উপ-সমন্বয়কারী রঞ্জন বকসী নুপু, গবেষণা সংস্থা আরডিসির সাধারণ সম্পাদক জান্নাত এ ফেরদৌসী, কাজল লতা দাস প্রমূখ।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।