দুর্গাপুরে গ্রেপ্তার আতংকে আ.লীগ নেতাকর্মীরা
দুর্গাপুরে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় দুপক্ষের সংর্ঘষে শতাধিক আহত ও এমপির গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের করা ৪টি মামলায় জয়নগর ইউনিয়নসহ আশেপাশের এলাকার কয়েক হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার আতংকে ঘর ছাড়া হয়েছেন।
ঘটনার পরদিন এমপির গাড়িতে হামলার ঘটনায় ৫৬ জন এজাহার ভুক্ত ও অজ্ঞাত ১ হাজার জনের নামে দুর্গাপুর থানায় ও রাজশাহীর আদালতে ৪টি মামলা দায়ের করা হয়। পরে থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনার জড়িত অভিযোগে জয়নগর ইউপির ৪ জন আওয়মী লীগের নেতাকর্মীকে আটক করে জেলহাজতে পাঠানো হয়। বর্তমানে তারা জেলহাজতেই রয়েছেন। এ ভয়ে গ্রেপ্তার আতংকে ঘর ছাড়া হয়েছেন জয়নগর ইউপির কয়েক হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, সুখানদিঘী গ্রামের আফজাল হোসেন(৩৭), আনিছুর রহমান(৩৩), ব্রম্মপুর গ্রামের ময়েন উদ্দিন(৩২), কানপাড়ার আলমগীর হোসেন মাষ্টার(৩৫)। এরা প্রত্যেকেই বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন।
এদিকে সংর্ঘষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশের উপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা প্রদানের ঘটনায় থানার এসআই সালাম আজাদ বাদি হয়ে একটি মামলা করে। এছাড়া সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারা, উপজেলা চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের উপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের ড্রাইভার মিজানুর রহমান একটি মামলা দায়ের করে। নেতাকর্মিদের উপর হামলা মঞ্চ ভাঙচুরের ঘটনায় অপর মামলাটি দায়ের করেন জয়নগর ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি মকছেদ আলী। পরে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ সরদার ও তার সমর্থকের উপর হামলার ঘটনায় রাজশাহীর আদালতে আরো একটি মামলা দায়ের করে জয়নগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা ফজলুর রহমান।
এবিষয়ে জয়নগর ইউপির আ.লীগ কর্মী বাবর আলী, হায়দার, বাবু, ইসলাম আলীসহ কয়েকজন ব্যক্তি জানান, সেদিন তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। তাও তারা রাতে হলে গ্রেপ্তার আতংকে ঘরে থাকতে পারছেন না।
এদিকে, রাজশাহী আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ সরদার বলেন, আমি (ওসি) সাহেবকে অনুরোধ করে বলেছি আপনি মামলার আসামিদের তালিকা প্রকাশ করুন। যাতে গ্রেপ্তারের নামে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি না করতে হয়। তাছাড়া বর্তমানে জয়নগর ইউপি’র আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা নির্ভয়ে রাতে ঘুমাতে পারছে না। ফলে এই ইউনিয়নের কয়েক হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা গ্রেপ্তার আতংকে ঘর ছাড়া হয়েছেন।
জেলা আ.লীগের সহসভাপতি আরো জানান, ঘটনাটি নিয়ে জেলা আ.লীগের কমিটির সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। এতে দুপক্ষ বসে আ.লীগের নেতাকর্মীদের দায়ের মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে। ফলে জেলা কমিটির সিন্ধান্তের মাধ্যামেই অতি অল্প সময়ের মধ্যে নেতাকর্মীদের উপর দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ২ এপ্রিল(শনিবার)বিকেলে দুর্গাপুর উপজেলার জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাছাইয়ের বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে দুগ্রুপের মধ্যে সংর্ঘষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ওই সংর্ঘষের সময় এমপি আব্দুল ওয়াদুদ দারা এবং উপজেলা চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ সরদার ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক আহত হয়। এছাড়াও বর্ধিত সভায় সংর্ঘষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় সব মিলিয়ে প্রায় শতাধিকের উপরে আহত হয়। পরে সংর্ঘষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজশাহীর আদালতে চারটি মামলা দায়ের করে। এছাড়া দুর্গাপুর থানা পুলিশ জয়নগর ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে আফজাল, আনিছুর, ময়েন, আলমগীর ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে, ৫৬ জন এজাহার নামীয় আর ১ হাজার জন অজ্ঞাত আসামি হওয়ায় জয়নগর ইউনিয়নসহ আশে পাশের এলাকার কয়েক হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার আতংকে ঘর ছাড়া হয়েছেন।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।