ইকুয়েডরে ভূমিকম্প: বেড়েই চলছে মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রকাশ : ১৮ এপ্রিল, ২০১৬
প্রিন্টঅঅ-অ+
ইকুয়েডরের উপকূলীয় অঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২০০ জনে দাঁড়িয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ দপ্তরের (ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায়, (বাংলাদেশ সময় ভোর ৫ টা ৫৮) এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৮। এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল উপকূলীয় শহর মুইসেন থেকে ২৭ কিলোমিটার দূরে, ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৯ কিলোমিটার গভীরে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পে বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য আসছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট রাফায়েল কোরেরা ছয়টি প্রদেশে জরুরি অবস্থা জারি করে ন্যাশনাল গার্ডকে উদ্ধার কাজে পাঠিয়েছেন। ভূমিকম্পের পর প্যাসিফিক সুনামি ওয়ার্নিং সেন্টার ও প্রতিবেশী দেশ পেরু সুনামি সতর্কতা জারি করে।
রাজধানী কিয়েটো থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে উপকূলীয় অঞ্চলে ভূমিকম্প আঘাত হানার পর ইকুয়েডরের ছয়টি রাজ্যে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়।
স্থানীয় সূত্রের খবরে বলা হচ্ছে, ভূমিকম্পে উপকূলীয় শহর গুইয়াকুইলের অনেক ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় সুনামি সতর্কতা সেন্টার বলছে, উপকূলে বিপজ্জনক ঢেউ ও বাতাস ৩০০ কিলোমিটারের বেশি বেগে আঘাত হানতে পারে।
বিবিসি জানিয়েছে, সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় রাজধানী কিটোর একটি অংশ সাময়িকভাবে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। মান্তা শহরে বিমানবন্দরের একটি টাওয়ারও ভেঙে পড়েছে। ধ্বংস হয়েছে স্থানীয় বিমানবন্দরের টাওয়ার। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে দেশের একটি বড় তেল শোধনাগার অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রবল ঝাঁকুনিতে রাজধানী কিটোর বাসিন্দারা আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসে। গুয়ায়াকিল শহরে একটি ওভারপাস ধসে পড়ে। কিটোর বাসিন্দা জোলিয়া ভিলেনাকে উদ্ধৃত করে বিবিসি লিখেছে, “আমার বাড়ি নড়ছিল, জিনিসপত্র ছিটকে পড়ছিল আর বাচ্চারা কাঁদছিল। আমরা আতঙ্কের মধ্যে আছি।”
কলম্বিয়াতেও এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। সেখানে একটি ক্লিনিক থেকে রোগীদের সরিয়ে নেওয়া হয় বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
স্থানীয় দৈনিক এল টেলেগ্রাফো জানিয়েছে, উদ্ধারকর্মীরা ৫৮৮ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। দুর্গতদের জন্য খোলা হয়েছে পাঁচটি আশ্রয় কেন্দ্র। সন্ধ্যার শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর দফায় দফায় মৃদু ও মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হচ্ছে সেখানে। বহু মানুষকে রাত কাটাতে হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে।
দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট হোর্হে গাস সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, জানমাল রক্ষায় জরুরি বিভাগ, পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রশান্ত মহাসাগরে ‘রিং অব ফায়ার’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠা ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকুয়েডরের অবস্থান। ১৯৭৯ সালের পর সেখানে এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।