জাপানে আবারো শক্তিশালী ভূমিকম্প, নিহত ২৫
জাপানে আবারো শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়েছে। এতে নিহত হয়েছে ২৫ জন। নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারের ভূমিকম্পের একদিন পার হতে না হতেই দেশটির স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে আবারো ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল জাপান।
এবার পরপর দুবার বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়েছে। জাপানের দক্ষিণাঞ্চলের কুমামোতো শহরে প্রথমে রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রা এবং কয়েক মিনিট পরে একই এলাকায় ৭ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) তাদের ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানিয়েছে। তবে জাপানের জাতীয় সম্প্রচার মাধ্যম এনএইচকে ভূমিকম্পের তীব্রতা ৭.৩ বলে উল্লেখ করে।
বিবিসির তথ্য মতে, জাপানের স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ১টা ২৫ মিনিটে ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। ভূপৃষ্ঠ থেকে এর কেন্দ্র ছিল ১০ কিলোমিটার গভীরে। এর কয়েক মিনিট পরে ৭.৪ মাত্রার ভূমিকম্প হয়, যার কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ৪০ কিলোমিটার গভীরে।
বড় দুটি ভূমিকম্পের পর ছোট ছোট ভূমিকম্প ও পরাঘাত হয়। এবারের ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এরই মধ্যে ২৫ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে এনএইচকে।
জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আহত হয়ে হাসপাতালে এসেছে ৭৬০ জন। তবে শুধু হাসপাতালে আসা লোকদের সংখ্যা সরকারিভাবে উল্লেখ করা হলেও প্রকৃতপক্ষে আহতের সংখ্যা অনেক বেশি।
জাপানের মন্ত্রিসভার মুখ্যসচিব ইয়োশিহিদে সুগা জানিয়েছেন, আশঙ্কা করা হচ্ছে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছে অথবা চাপা পড়ে মারা গেছে প্রায় ৮০ জন। উদ্ধার তৎপরতায় গতি আনতে অতিরিক্ত সেনা ও নিরাপত্তাকর্মী পাঠানো হচ্ছে। এ ছাড়া ভোর থেকেই উদ্ধার কার্যক্রম আরো গতিশীল হয়েছে।
ভূমিকম্পের পরপর রাতেই নিজ কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে সাংবাদিকদের বলেন, প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে যা যা করা প্রয়োজন সবই করা হচ্ছে। উদ্ধার অভিযান চলছে, আটকে পড়া লোকদের উদ্ধার করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে পরিস্থিতি সম্পর্কে জনগণকে সঠিক তথ্য দেওয়া হচ্ছে।
ভূমিকম্পের পর কুমামোতো ও এর আশপাশের অঞ্চলে প্রায় ২ লাখ বাড়ি বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। একটি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের কাছাকাছি বসবাসকারী বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারের ভূমিকম্পে ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে নয়জন নিহত হয়। ওই দিন আহত হয় সহস্রাধিক লোক। এদিকে ভূমিকম্পের পর উপকূলে সুনামি সতর্কতা জারি করা হলেও ৫০ মিনিট পর তা তুলে নেওয়া হয়। সতর্কতায় বলা হয়, ৩ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। তবে পরমাণুকেন্দ্রগুলোয় ক্ষতি হওয়ার কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে ৬.৪ মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার পর জাপানে আতঙ্ক ও উদ্বেগ দেখা যায়। বহু লোকজন বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে আসে। এর এক দিন পর আবারও বড় ধরনের দুটি ভূমিকম্প হওয়ায় জাপানিদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। পাঁচ বছর আগে ২০১১ সালে জাপানে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প ও সুনামিতে ১৮ হাজার মানুষ নিহত হয়। আশ্রয়হীন হয় ৪০ হাজার লোক। সেই ভয়াবহ স্মৃতি জাপানিদের তাড়া করে ফেরে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।