পাহাড়ে বইছে বৈসাবির উৎসবের হাওয়া
পাহাড় জুড়ে বিজু-সাংগ্রাইন-বৈসু-বিষু (বৈসাবি) উৎসবের মেলা শুরু হয়েছে। পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের ১০ ভাষাভাষির ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবি ঘিরে রাঙামাটিতে তিন দিনব্যাপী মেলা আয়োজন করা হয়।
জানা যায়, পার্বত্যাঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের নিজস্ব নিয়মে বৈসাবি উৎসব পালন করে থাকে। বৈসাবি উৎসবকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতির সংমিশ্রনে এক বৈচিত্র্যময় রূপ ধারণ করেছে। তাই আগাম নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বৈসাবি আনন্দে মেতে উঠে এ অঞ্চলের পাহাড়ী-বাঙ্গালীরা। এবারের উৎসবকে ঘিরে রাঙামাটির জেলায় আয়োজন করা হয়েছে নানা আয়োজন। রাঙামাটি উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট আয়োজিত ৩ দিনব্যাপী মেলার অয়োজন করা হয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতির উৎসবের আসর।
সোমবার বিকাল ৪টায় বিজু-সাংগ্রাইন-বৈসু-বিষুকে (বৈসাবি) মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পার্বত্য জেলার সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকাম, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক সামসুল আরেফিন, রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শান্তনা চাকমা, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সভাপতি মজুবুল হক বুলবুল, রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট ভারপাপ্ত পরিচালক রুনেল চাকমাসহ অনেকে।
শুরু হওয়া বৈসাবি মেলার প্রথম দিন ছিল উৎসব মুখর। পাহাড়ি-বাঙালি নির্বিশেষে সব সম্প্রদায়ের অগণিত নারী-পুরুষের ঢল নামতে শুরু করে মেলা স্থলে। সন্ধ্যায় উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়। মেলাকে ঘিরে পাহাড়ের বইছে আনন্দের বন্যা। সৃষ্টি হয়েছে পাহাড়ি-বাঙালিসহ সব ধর্ম, বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সম্প্রীতির মিলন মেলায়।
মেলায় প্রদর্শনী জন্য ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের ঐতিহ্য কৃষ্টি-সংস্কৃতি, অলংকার, বই, কোমর তাঁতের তৈরি পোশাক ও বেতের পণ্য সামগ্রী স্টল সাজানো হয়েছে।
অন্যদিকে, মেলায় চলছে আনন্দের হোলি আর পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য-সঙ্গীত, খেলাধুলা, নাটকসহ চাকমা, বম, চাক, ত্রিপুরা ও মারমা সাংস্কৃতিক দলের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মেলা চলাকালে যে কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা ও বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থার জোড়দার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের মাত্র এক বছর পর থেকে শুরু হয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের সাংস্কৃতিক উৎসব ও মেলার আয়োজন। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে এ প্রথা চালু রয়েছে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।