রিজার্ভ চুরি: আরও ৮ লাখ ডলার ফেরত দিলেন কিম
বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি যাওয়া রিজার্ভের অর্থ আরও প্রায় ৮ লাখ ৩০ হাজার ডলার ফিলিপিন্সের মুদ্রা পাচার কর্তৃপক্ষের (এএমএলসি) কাছে ফেরত দিয়েছেন ক্যাসিনোর জাঙ্কেট অপারেটর কিম অং।
সোমবার (০৪ এপ্রিল) সকালে আইনজীবীর মাধ্যমে কিম ওই অর্থ ফেরত দেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন এএমএলসির নির্বাহী পরিচালক জুলিয়া বাকে-আবাদ।
দ্য ইনকোয়ারারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩৮ দশমিক ২৮ মিলিয়ন পেসোর মধ্যে দুটি ৫০০ পেসোর নোট জাল ধরা পড়ায় ফেরত দেওয়া কিছুটা জটিলতা সৃষ্টি হয়।
জুলিয়া বলেন, সকাল ১১টা থেকে দুই ঘণ্টা ধরে ওই মুদ্রাগুলো গণনা করে পাওয়া যায় দুটি জাল নোট।
কিমের আইনজীবী ভিক্টর ফার্নান্দেজ বলেন, কিম অংয়ের আইনি পরামর্শক ইনোসেনসিও ফেরারকে নিজের পকেট থেকে ওই দুটি জাল নোট বদলে দিতে হয়েছে।
ফিলিপিন্সে চুরি করে নিয়ে যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ ডলারের মধ্যে এর আগে ‘ধার উসুল’ হিসেবে পাওয়া ৪৬ লাখ ডলারের বেশি এএমএলসির কাছে ফেরত দেয় কিম অং।
তার এই আইনজীবী বলেন, কিম অংয়ের কাছ থেকে গাওয়ের ধার করা ৪৫০ মিলিয়ন পেসোর (প্রায় এক কোটি ডলার) বাকি অর্থ ফেরত দিতে আরও ১৫ থেকে ৩০ দিন লাগতে পারে।
ফেব্রুয়ারির শুরুতে ভুয়া নির্দেশনা পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপিন্সের রিজল কর্মাশিয়াল ব্যাংক পাঠানো হয়।
রিজল ব্যাংকের চারটি অ্যাকাউন্ট থেকে ওই অর্থ ক্যাসিনোর জুয়ার টেবিলে হাতবদল হয়ে ফিলিপিন্সের মুদ্রা ব্যবস্থায় মিশে যায় বলে স্থানীয় পত্রিকাগুলি খবর প্রকাশ করে।
৮ কোটি ১০ লাখ ডলার বেইজিংয়ের শুহুয়া গাও এবং ম্যাকাওয়ের ডিং জিজে নামে দুই জাঙ্কেট এজেন্ট ফিলিপিন্সে নিয়ে যায় বলে সিনেট কমিটির শুনানিতে দাবি করেছেন কিম অং।
অংয়ের ভাষ্যমতে, গাও প্রায়ই ফিলিপিন্সে যাওয়া-আসা করেন এবং গত আট বছর ধরে জুয়ার মক্কেল (জাঙ্কেট এজেন্ট) এনে দেন। এই মহলে পরিচিতি রয়েছে তার। ম্যাকাওয়ের ব্যবসায়ী ডিংকেও তিনিই তার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।
গাও একবার সোলায়ার রিসোর্ট অ্যান্ড ক্যাসিনোতে এক সপ্তাহের মধ্যে ৪৫০ মিলিয়ন ফিলিপিনো পেসো (প্রায় এক কোটি ডলার) হেরে ওই অর্থ তার কাছ থেকে ধার করেছিলেন।
বাংলাদেশের চুরি যাওয়া অর্থ থেকে ওই এক কোটি ডলার গাও তাকে পরিশোধ করেন বলে সিনেট শুনানিতে দাবি করেন অং।
এই এক কোটি ডলারের বাইরে দুটি ক্যাসিনোর জুয়ার অ্যাকাউন্টে থাকা আরও ৫৫ লাখ ডলার ফেরত দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন তিনি।
এছাড়া আরও ১ কোটি ৭০ লাখ ডলার এখনও হাতবদল হয়নি এবং তা মুদ্রা বিনিময়কারী প্রতিষ্ঠান ফিলরেমের কাছে থাকতে পারে বলে অংয়ের দাবি। তবে তা অস্বীকার করেছেন ফিলরেমের কর্মকর্তারা।
এদিকে লোপাট ৮ কোটি ১০ লাখ ডলারের মধ্যে প্রায় অর্ধেক অর্থ এখনও ফিলিপিন্সে রয়েছে জানিয়ে তা বাংলাদেশকে ফেরত দেওয়া সম্ভব বলে মঙ্গলবারের শুনানির পর এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন দেশটির সিনেটর রালফ রেক্তো।
প্রায় ৩৪ মিলিয়ন ডলার দুটি ক্যাসিনো ও মুদ্রা বিনিময় ব্রোকারেজ হাউজের কাছে রয়েছে বলে সিনেটরের ওই বিবৃতির বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার ম্যানিলা বুলেটিন জানায়।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।