লালমনিরহাটে আকিজ কোম্পানি লিমিটেডের ৪টি বিড়ি ফ্যাক্টরি বিনা নোটিশে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বেকার হয়ে পড়েছে প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক। রবিবার (৩ এপ্রিল) শ্রমিকরা ফ্যাক্টরিতে কাজে গেলে ফ্যাক্টরি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে জানতে পারে।

এ সময় হাজার হাজার শ্রমিকের বকেয়া বেতন পরিশোধ না করে ফ্যাক্টরি বন্ধ করায় বিক্ষোভ করেছে শ্রমিকরা। দুইদিন ধরে করা এই বিক্ষোভে শ্রমিকরা তাদের বেতন বকেয়া দ্রুত পরিশোধের দাবি জানায়।

বন্ধ হওয়া ফ্যাক্টরিগুলো হলো- জেলার হাতিবান্ধা উপজেলার দৈখাওয়া এলাকার ১টি, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী এলাকায় ২টি ও আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ি এলাকায় ১টি।

এদিকে বিনা নোটিশে হঠাৎ করে ফ্যাক্টরি বন্ধ ঘোষণা করায় হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ে সাধারণ শ্রমিকরা। সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটে স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত কোন শিল্প কলকারখানা গড়ে না উঠায় ১৯৮৪ সাল থেকে আকিজ কোম্পানি ৪টি বিড়ি ফ্যাক্টরি গড়ে তোলে। এতে জেলার প্রায় ১০ হাজার বেকার নারী-পুরুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়।

রবিরার থেকে একযোগে ফ্যাক্টরিগুলো বন্ধ হওয়ায় শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। শ্রমিকরা পুর্বের মজুরি পরিশোধ ও দ্রুত ফ্যাক্টরি চালুর দাবিতে বিক্ষোভ করে। যে কোন সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ফ্যাক্টরি ভাংচুরসহ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর আশংকা রয়েছে।

সাপ্টিবাড়িতে অবস্থিত ফ্যাক্টরির পুরাতন শ্রমিক আজিজার রহমান জানান, গত সপ্তাহের বকেয়া বিল এখনো আমরা পাইনি। আর মাত্র ১দিন কাজ করলেই শ্রমিকরা তাদের বকেয়া বেতন পেত। এ অবস্থায় নোটিশ ছাড়াই হঠাৎ করে কর্তৃপক্ষ ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা চরম হতাশায় ভুগছি। পূর্বের বেতন না পাওয়ায় আমরা সাধারণ শ্রমিকরা পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছি। দীর্ঘদিন থেকে এ কাজে নিয়োজিত থাকায় হঠাৎ করে অন্য কোন কাজও করতে পারছিনা। 

২৫ বছর ধরে ফ্যাক্টরিতে কর্মরত শ্রমিক পনির উদ্দিন জানান, আমার পরিবারে ৮ জন সদস্য। সবাই আমার আয়ের উপর নির্ভরশীল। কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আগামিদিনগুলো কিভাবে কাটবে ভেবে পাচ্ছিনা এবং জানতেও পারছিনা কবে নাগাদ পুনরায় ফ্যাক্টরি চালু হবে। 

নারী শ্রমিক ফাতেমা খাতুন জানান, প্রতিদিন কাজ না করলে পেটে ভাত জোটেনা। এভাবে কাজ বন্ধ থাকলে আমরা খাব কি? তাই তিনি দ্রুত বকেয়া মজুরি পরিশোধসহ ফ্যাক্টরি চালুর দাবি জানান।

এ ব্যাপারে আকিজ কোম্পানির সাপ্টিবাড়ি শাখার ম্যানেজার আবু তালেব জানান, শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধের ব্যাপারে বার বার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। কিন্ত শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ না করে ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দেওয়ায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বকেয়া মজরির দাবিতে যে কোন সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে পারে বলেও আশংকা করেন তিনি।