হাতিয়ায় ধর্ষণের সাজায় ধর্ষককে ২ বেত্রাঘাত
হাতিয়ায় একটি চাঞ্চল্যকর ধর্ষণের ঘটনা মাত্র ২ লক্ষ টাকায় ধামাচাপা দিয়েছে নব নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। শনিবার (২ এপ্রিল) জাহাজমারা ইউপি চেয়ারম্যান মাছুম বিল্লাহর উদ্যোগে তার বাসায় শালিস বৈঠকে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা, ৫০ ঘা বেত ও ধর্ষকের গলায় জুতার মালা পরিয়ে জাহাজমারা বাজারে ঘুরানোর এক প্রহসনমূলক রায় ঘোষণা করেছেন।
জরিমানার টাকা ও জুতার মালার কোন হদিস না মিললেও ৫০ বেতের মধ্যে মাত্র ২ ঘা বেত দিয়েই ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
কয়েকজন এলাকাবাসী জানায়, জাহাজমারা বাজারের কসমেটিক্স ব্যবসায়ী সালাহ উদ্দিনের(৩৭) দোকানে মাঝেমধ্যে ঝাঁড়ু দেওয়ার কাজ করতো ২নং ওয়ার্ডের দরিদ্র পরিবারের ১০ বছর বয়সী ও স্থানীয় মাদ্রাসার ৩য় শ্রেণির ছাত্রী। গত মঙ্গলবার শিশুটি ঝাঁড়ু দেওয়ার কাজে দোকানে গেলে সালাহ উদ্দিন দোকানের দরজা বন্ধ করে টাকার লোভ দেখিয়ে দোকানের পেছনের কক্ষে ঝাঁপটে ধরে মুখ বেঁধে ধর্ষণ করে। মেয়েটি বাড়িতে মা-বাবাকে গিয়ে সব ঘটনা খুলে বলে। তারা মেয়েটিকে একদিন বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেন। অবস্থার অবনতি হলে ধর্ষিতা মেয়েটিকে নিয়ে গত বুধবার হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে ভর্তি করায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক জানান, ধর্ষিতাকে সেলাইসহ অধিক রক্তক্ষরণের কারণে ১ ব্যাগ রক্তও দেওয়া হয়েছে। থানায় মামলা না করার জন্য ধর্ষকের নিয়োজিত একটি প্রভাবশালী মহল ঔষধ ও চিকিৎসা খরচের টাকা পরিশোধ করাসহ ধর্ষিতার বাবাকে টাকার লোভ দেখিয়ে মেয়েটিকে একদিন পর হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়।
শনিবার(২ এপ্রিল) সকালে চেয়ারম্যানের উদ্যোগে শালিস বসে। শালিসে চেয়ারম্যান ছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন- নব নির্বাচিত মেম্বার খোকন, নিজাম, প্রাক্তন মেম্বার নুর ইসলাম। শালিসে ধর্ষক সালাহ উদ্দিনকে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা, ৫০ ঘা বেত ও ধর্ষকের গলায় জুতার মালা পরিয়ে জাহাজমারা বাজারে ঘুরানোর রায় দেয়। কিন্তু জুতার মালা পরিয়ে বাজারে ঘোরানো হলে জনতা গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলতে পারে শালিসদারদের এমন অজুহাতে পরক্ষণেই জুতার মালা পরানোর রায় বাতিল করা হয়। ৫০ ঘা বেতের পরিবর্তে মাত্র ২টি বেত দেওয়া হয়। ২ লক্ষ টাকা কবে কখন পরিশোধ করা হবে তার কোন নিশ্চয়তাও পায়নি ধর্ষিতার দরিদ্র বাবা। অর্থাৎ মাত্র ২ ঘা বেত দিয়েই এমন একটি চাঞ্চল্যকর ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিয়েছে জাহাজমারার নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান মাছুম বিল্লাহ ও তার পরিষদের মেম্বাররা।
এ বিষয়ে জাহাজমারার নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান মাছুম বিল্লাকে মোবাইলে জানতে চাইলে তিনি জানান, মোবাইলে কিছুই বলা যাবে না, আপনি সামনা সামনি আসলে পর কথা বলবো।
হাতিয়া থানার এসআই জানান, ওসি সাহেব ছুটিতে আছেন। ঘটনাটি আমরা জানি না, এখন খবর নেব।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।