সামগ্রিক অর্জন ম্লান করে দিয়েছে: সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেছেন, দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হলেও কয়েকটি ঘটনা সামগ্রিক অর্জনকে ম্লান করে দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) ৬৩৯ ইউপির নির্বাচন শেষে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, নির্বাচনে ব্যাপক ভোটারের উপস্থিতি ছিল। বিশেষ করে নারী ভোটারের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্য করা মতো। টেলিভিশন দেখে মনে হয়েছে, প্রথম ধাপের চেয়ে দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচন ভালো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রথম ধাপে ম্যাজিস্ট্রেটরা অনিয়মকারীদের আর্থিক জরিমানা ও কারাদণ্ড দিয়েছেন। ১১ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করা ও সাতক্ষীরার কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাকে তলব করা হয়েছে। অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে তাদের দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এ জেলায় পুলিশ সুপারকেও শুনানি করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি সম্পর্কে বলা হয়েছে। এখন তারা কি ব্যবস্থা নেন, এবিষয়ে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করা হবে।
রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন, প্রথম ধাপের ওইসব গৃহিত ব্যবস্থার কারণে ভবিষ্যতে নির্বাচন আরও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে। বেশিরভাগ জায়গায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ হলেও কয়েকটি ঘটনা সামগ্রিক অর্জনকে ম্লান করেছে।
তিনি বলেন, কেরানীগঞ্জে শিশু ও ভোলায় সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করে দোয়া করছি।
২য় পর্যায়ের নির্বাচনেও যারা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দায়িত্ব পালনে যে কেউ অবহেলা বা অনিয়ম করলে সেক্ষেত্রেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা প্রশংসনীয় কাজ করছে তাদের ধন্যবাদ দিচ্ছি। বিশেষ করে শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে ভোট দেওয়ার জন্য ভোটারদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। একইসঙ্গে ভবিষ্যতেও একইভাবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দেওয়ার আহ্বান করছি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব হয় না। তবে খবর যাচাই করে নিতে হয়। অনেক সময় মৌখিক খবর আসে, যাচাই করে নেই। ইতোমধ্যে যেখানে গণ্ডগোল হয়েছে, সেখানে কেন্দ্র বন্ধ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৩৩টি কেন্দ্র বন্ধ করা হয়েছে।
নির্বাচনে সব বিষয়ই আমরা সিরিয়াসলি নিচ্ছি। কিভাবে ভবিষ্যতে সংঘর্ষ, মারামারি কমিয়ে আনা যায়, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি। সংশ্লিষ্টদের বলেছি, আইন প্রয়োগ করুন। কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। আশা করি, ভবিষ্যতে এটা আরো ইমপ্রুভ করবে, আরো শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হবে।
নির্বাচন কেমন হলো? এমন প্রশ্নের জবাবে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন, আসলে নির্বাচন কেমন হলো, আপনারা সেটা ভালো দেখছেন, বুঝছেন। আপনাদের রিপোর্ট দেখেই বুঝছি, ভালো-খারাপ দু’টোই দেখেছি।
নির্বাচন কমিশন অসহায় বিএনপির এমন বক্তব্য সামনে আনা হলে সিইসি বলেন, প্রত্যেক দলের আলাদা মনোভাব থাকে। তাদের আমরা আশ্বস্ত করেছি। এছাড়া তাদের অনেক বক্তব্যই গ্রহণ করেছি। ডিস্ট্রিক হেড কোয়ার্টারে মনোনয়নপত্র জমাদানের ব্যবস্থা করেছি। অনলাইনেও দ্রুত চালু করতে পারবো।
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন, প্রথম ধাপে রাতে সিল মারার মতো অনৈতিক, অগ্রহণযোগ্য কাজ চলেছে। আমাদের পদক্ষেপের কারণে এবার একটিও ঘটেনি। তবে ভোলার একটি জায়গায় হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা হিসেবে কেন্দ্রের ভোট বাতিল করা হয়েছে।
পুলিশের গুলিতে সাংবাদিক আহত হয়েছে, কমিশন কি ব্যবস্থা নেবে? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ওটা আনফরচুনেট ঘটনা। আপনারা দেখেছেন প্রথম ধাপের নির্বাচনে একজন আনসার নিজের গুলিতে নিহত হয়েছেন। তাই আনফরচুনেট ঘটনা যাতে না ঘটে, সেজন্য অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরো সতর্ক হতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব মোখলেছুর রহমান, যুগ্ম সচিব জেসমিন টুলী ও জনসংযোগ পরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান প্রমুখ।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।