সাতক্ষীরার তালায় কবি সিকান্দার আবু জাফর মেলার নামে চলছে অশ্লীল নৃত্য আর জমজমাট জুয়ার আসর। ফলে উঠতি তরুণরা বিপথগামী হচ্ছে। আর এ সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে আমজাদ হোসেন নামের এক জুয়াড়ী ও স্থানীয় সুবিধাবাদী ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন সোনা।

২৪ মার্চ (বৃহস্পতিবার) তালার তেঁতুলিয়া গ্রামে কবির ৯৭ তম জন্মবার্ষিকীতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মহিউদ্দীন মেলার উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পরদিন থেকেই লটারী আর পুতুল নাচের নামে চলছে জীবন্ত পুতুলের খোলামেলা অশ্লীল নৃত্য। আর সে সঙ্গে সঙ্গে প্রকাশে চলে জুয়ার আসর।

জানা যায়, দিনের বেলা মেলার কোন তোড়জোড় থাকে না। সন্ধ্যা হলেই শুরু হয় মেলার আনন্দ উৎসব। রাত যত গভীর হয় নৃত্যের অশ্লীলতা ততই বাড়তে থাকে। বাংলা সাহিত্যের কিংবদন্তী কবি সিকান্দার আবু জাফরের জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এ মেলায় নেই কোন লাইব্রেরী, স্মৃতি সংগ্রহশালা।

কতিপয় সুবিধাবাদীরা জেলা প্রশাসনকে ভুল বুঝিয়ে মেলার নামে অর্থ উপার্জন করছে। মেলা প্রাঙ্গনে ৩০ মিনিট অন্তর তিন আসরে সুন্দরী তরুণীদের দিয়ে চালানো হয় অশ্লীল নৃত্য। আর তার পাশেই চলছে জুয়াবোর্ড।

অপরদিকে, ২০ টাকার লটারীতে গাড়ি, ফার্ণিচার, অলংকার বহুবিধ প্রলোভনে দেখিয়ে জনসাধারণের পকেট খালি করা হচ্ছে। লটারী, জুয়া, চরকা, বাইলা, যাদু আর পুতুল নাচের মাধ্যমে গ্রামের সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে ত্রিশ লক্ষাধিক টাকা। তাছাড়া সমাজের চিহ্নিত অপরাধীরা নিরাপদ আশ্রয়স্থল মেলা প্রাঙ্গনই বেছে নিয়েছে। সেই সঙ্গে তালমিলিয়ে চলছে মাদকসেবীদের রমরমা আড্ডা।

এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুর রহমান। 

তবে আলোচিত জুয়াড়ী মেলার মাঠ মালিক আমজাদ হোসেন বলেন, আমরা প্রশাসনকে টাকার ভাগ দিয়েই এসব চালাই। 

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোদাচ্ছের আলী বলেন, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চলালে ছাড় দেওয়া হবে না। 

এসব বিষয়ে জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মহিউদ্দীন জানান, অশ্লীল নৃত্য আর জুয়ার বিষয়টি জানা নেই। তবে এই ধরণের কর্মকাণ্ড চালালে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

মেলায় অশ্লীল নৃত্য, জুয়া আর লটারীর নামে নীরব চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।