সারা হোসেনের ‘আন্তর্জাতিক সাহসী নারী পুরস্কার’ গ্রহণ
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রকাশ : ৩০ মার্চ, ২০১৬
প্রিন্টঅঅ-অ+
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের ‘আন্তর্জাতিক সাহসী নারী পুরস্কার’ (ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ অ্যাওয়ার্ড) গ্রহণ করেছেন বাংলাদেশের মানবাধিকারকর্মী ও খ্যাতিমান আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন।
বাংলাদেশের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
এ বছর তাঁর সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১৪ জন নারীকে এ সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে।
মানবাধিকার ও নারীর সম-অধিকার রক্ষা, শান্তি, নারীর ক্ষমতায়ণ, লিঙ্গ বৈষম্য নিরসনের মত ক্ষেত্রে যে সব মহিলা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দৃষ্টান্তসূচক অবদান রেখে চলেছেন, তাদের কাজের স্বীকৃতি জানিয়ে প্রতি বছর এই পুরস্কার দেওয়া হয়। এ বছর বাংলাদেশ, চীন, ইরাক, ফ্রান্স, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, গুয়াতেমালা, রাশিয়া, স্লোভাকিয়া, বেলিজ, ইয়েমেন, তানজানিয়া, মরিতানিয়া, সুদানসহ ১৪টি দেশের বিশিষ্ট মহিলাদের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়ার আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রী জন কেরী কিছু বক্তব্য রাখেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী জন কেরি কেরী বলেন, ‘দুই কন্যার গর্বিত পিতা এবং এক বলিষ্ঠ মহিলা – যিনি আন্তরিকতার সঙ্গে এ ক্ষেত্রে তার অবদান রেখেছেন, তার স্বামী হিসেবে – বিশ্বাস করুন, আমি জানি মহিলা ও বালিকাদের ক্ষমতায়ণ, নিজেদের ইচ্ছামত সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষমতা যে কতখানি পরিবর্তন আনতে পারে আমি তা উপলব্ধি করতে পারি’।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মহিলাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা অথবা সমাজে মহিলা ও বালিকাদের পৃথক করে রাখা কখনোই মেনে নেবো না। আমরা বাল্য বিবাহ এবং জোরপূর্বক বিবাহ সহ্য করবো না, অথবা আসিরিয়া বা ইরাকে সন্ত্রাসীরা যে ভাবে শিশু কন্যাকে যে কোন মূল্যের বিনিময়ে গবাদিপশুর মত বিক্রী করছে তা বরদাশত্ করবো না। আমরা এমন কোন বিশ্বকে মেনে নেবো না যেখানে কিশোরী-বালিকাদের শিক্ষা, বা স্বাস্থ্য পরিচর্যা থেকে বঞ্চিত করা হয় অথবা তাদের যৌনাঙ্গ হানি করা হয়। এবং যারা একথা বলে থাকে যে এই ধরণের নির্যাতনমুলক বিশেষ কোন ব্যবস্থা হচ্ছে চিরাচরিত এক নিয়ম এবং তার কোন বিকল্প নেই, তবে এটা করতে দেওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই, আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে বলবো যে এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে ত্রুটিপূর্ণ এবং তা বন্ধ করা আমাদের সবার দায়িত্ব’।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানায়, ২০০৭ সালে চালু হয় এ পুরস্কার। প্রতি বছরই বিশ্বের সাহসী নারীর পুরস্কার ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। যারা শান্তি, বিচার, মানবাধিকার, লিঙ্গ সমতা এবং নারীর ক্ষমতায়নে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেন তাদের এ পুরস্কার দেওয়া হয়। এ পর্যন্ত ৬০টি দেশের প্রায় একশ’ নারীকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
সারা হোসেন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেনের মেয়ে। পিছিয়ে পড়া নারী এবং মেয়েদের জন্য বিভিন্ন কাজ করেন বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন। নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধ সংক্রান্ত আইন প্রণয়নে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ২০১০ সালে এই আইনটি কার্যকর হয়।
সারা হোসেন ফতোয়া এবং নারীদের প্রতি অসম্মানজনক শাস্তির বিপক্ষে আইনি লড়াই করেছেন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলায়। পাশাপাশি ধর্ষণ ও যৌন হয়রানি প্রমাণের জন্য বিতর্কিত পরীক্ষাপদ্ধতির বিরুদ্ধেও আইনি লড়াই করেছেন তিনি।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।