নির্বাচনের শেষ মুহুতে হোয়াইক্যংয়ে ব্যাপক সংঘর্ষ
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউপির নির্বাচনে ব্যাপক সংঘর্ষ, ভাংচুর ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নির্বাচন চলাকালীন বেলা দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
দুপুরে টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনছিপ্রাং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুপুরে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ফরিদুল আলম জুয়েল দলবলসহ কেন্দ্রে ঢুকে নৌকা প্রতীকে ব্যালটে সীল মারা শুরু করলে ভোটাররা প্রতিবাদ করে। খবরটি তাৎক্ষণিকভাবে ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার ভোটার কেন্দ্র ঘেরাও করে ফরিদুল আলম জুয়েলকে অবরুদ্ধ করে রাখে। তিনঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পর সাংবাদিকদের সহযোগিতায় অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবির পাহারায় তিনি ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে সক্ষম হন।
অবরুদ্ধকালীন সময়ে কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কে ব্যারিকেড দিয়ে বিক্ষোভ করে এলাকাবাসি। এসময় পুলিশ ও দুই প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর সমর্থকদের সাথে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষ চলাকালে ফরিদুল আলম জুয়েলের গাড়ি ভাংচুর করা হয়। এসময় হামলায় আহত হয় ড্রাইভার হারুনসহ ৪জন।
ওই সময় উনছিপ্রাং কেন্দ্রে নৌকা ও তালা প্রতীকে সীল মারা হয় বলে প্রকাশ পায়।
অপরদিকে দুপুর ১টায় ব্যালট বাক্স ছিনতাই চেষ্টার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে ধরে গণ ধোলাই দেয় স্থানীয়রা। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
স্বতন্ত্র প্রার্থী নুর আহমদ আনোয়ারীর অভিযোগ, সকাল থেকে সুষ্ঠুভাবে ভোট শুরু হলেও ১২টার পর থেকে চারটি কেন্দ্রে নৌকার প্রতীকের লোকজন কেন্দ্রে ব্যাপক হাঙ্গামা শুরু করে। বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দেয়।
হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী জুনায়েদ আলী অভিযোগ করেছেন, দুর্বৃত্তরা ভোট নেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছিল। সরকার দল সমর্থকরা গতকাল রাত থেকে ভোটারদের ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার হুমদিক দেয় বলেও খবর পেয়েছি। সকাল থেকে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বিরোধী দল সমর্থক প্রার্থীর এজেন্টদের বের দেয়ার অভিযোগ তিনি নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন।
দু’ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৭ জন, সংরক্ষিত ৬ টি মহিলা আসনে ৩৯ জন এবং সাধারণ ১৮টি ওয়ার্ডে ১৪১ জনসহ মোট ১৮৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া দু’ইউনিয়নে মোট ভোটার ৫২ হাজার ৯১৯ জন।
হোয়াইক্যং মডেল ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, সংরক্ষিত ৩টি মহিলা আসনে ১৮ জন, ৯টি সাধারণ ওয়ার্ডে ৬৬ জন, মোট ৮৭ জন প্রার্থী রয়েছেন। এই ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ২৮ হাজার ৩৪ জন। এতে পুরুষ ভোটার ১৪ হাজার ৩২১ জন এবং মহিলা ভোটার ১৩ হাজার ৭১৩ জন। এ ইউনিয়নে ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১৯টি।
এছাড়া হ্নীলা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৪ জন, সংরক্ষিত ৩টি মহিলা আসনে ২১ জন, সাধারণ ৯টি ওয়ার্ডে ৭৫ জন, মোট ১০০ জন। এ ইউনিয়নে মোট ২৪ হাজার ৮৮৫ জন ভোটার রয়েছে। এতে পুরুষ ভোটার ১২ হাজার ৩৯৬ জন, মহিলা ভোটার ১২ হাজার ৪৮৯ জন। এই ইউনিয়নে ভোটকেন্দ্র সংখ্যা ৯টি।
গত ২২ মার্চ এই দুই ইউনিয়নের নির্বাচনের দিন ধার্য থাকলেও মামলার কারণে ২৭ মার্চ পূণঃনির্ধারণ করে নির্বাচন কমিশন।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।