র্যাবের যুগপূর্তি উদযাপন
২০০৪ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের প্যারেডে অংশগ্রহণের মাধ্যমে এলিট ফোর্স র্যাবের আত্মপ্রকাশ ঘটে। শনিবার (২৬ মার্চ) সন্ত্রাস দমনের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামা বাংলাদেশ পুলিশের এই এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) আজ ১২তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী।
একই বছরের ১৪ এপ্রিল (পয়লা বৈশাখে) রমনার বটমূলে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনের মধ্যদিয়ে মাঠে নামে র্যাব।
বাংলাদেশ পুলিশ ছাড়াও সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, বিজিবি, কোস্টগার্ড, আনসার ও সরকারের বেসামরিক প্রশাসনের বাছাই করা চৌকস কর্মকর্তা ও অন্য সদস্যদের নিয়ে গঠিত হয় র্যাব। ‘বাংলাদেশ আমার অহংকার’ স্লোগানে অন্ধকারে আলোকবর্তিকারূপে জনগণের আস্থা অর্জনকারী সংস্থা হিসেবে যাত্রা শুরু করে পুলিশের বিশেষায়িত এ বাহিনী।
সকাল ৮টায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে র্যাব সদর দপ্তরে পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ।
এরপর সকাল সোয়া ৮টার দিকে র্যাবের মহাপরিচালকের বিশেষ দরবার শুরু হয়। শুরুতেই স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সকল দেশপ্রেমী অকুতোভয় সহকর্মীর রুহের মাগফিতার কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত এবং তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়।
সকাল ৯টা থেকে আত্মত্যাগকারী র্যাব সদস্যদের পরিবারকে বিশেষ সম্মানী প্রদান, বিশেষ সম্মেলন, আভিযানিক ও সাহসিকতাপূর্ণ কাজের জন্য র্যাব সদস্যদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ, প্রীতিভোজ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
র্যাব সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে সারাদেশে র্যাবের অভিযানে জেএমবিসহ বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের ১৬ জন নেতাকর্মী গ্রেপ্তার এবং বিপুল পরিমাণ বোম, গ্রেনেড, ডেটোনেটর, বিস্ফোরক ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। অস্ত্রসহ ১৬০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের কাছ থেকে বিভিন্ন প্রকারের ১৪৬টি অস্ত্র, ১০.৬৫ কেজি বিস্ফোরক, ৭৭টি বোমা-ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের মাদকসহ এক হাজার ৮৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মাদকের মধ্যে হেরোইন ১০.৭৩৩ কেজি, ইয়াবা ট্যাবলেট ৫৩ লাখ ৪৪ পিস, ফেনসিডিল ২২ হাজার ৯৮৮ বোতল, গাঁজা ১০২০.৩৪ কেজি, বিদেশি মদ ৪ হাজার ২৬৯ বোতল, দেশি মদ ৩৬ হাজার ৮৫৪ লিটার, বিয়ার ২ হাজার ১১৭ ক্যান ও নেশা জাতীয় ইনজেকশন ৫৫৪ পিস উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও দু’জন চরমপন্থী সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৮টি অভিযানে পর্ণ ও পাইরেটেড ২৫ হাজার ৩৩ সিডিসহ ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ভেজালবিরোধী ২৪৭টি অভিযানে ৩ কোটি ৮২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯ টাকা জরিমানা এবং ১৫৩ জনকে সরাসরি জেল প্রদান করা হয়। অপহরণের অভিযোগে ৪৫ জনকে গ্রেফতার এবং ৩২ জন ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়। নারী ও শিশু পাচারের অভিযোগে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার এবং ৭ ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়েছে। চাঁদাবাজির অভিযোগে ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়। চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অস্ত্র ও গুলিসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভূয়া চিকিৎসক ৫ জন এবং প্রতারক ৫৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
বের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের উপ-পরিচালক মেজর রুম্মান মাহমুদ জানান, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই র্যাব দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরনের অপরাধীকে আটক করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই র্যাব গোয়েন্দা এবং আভিযানিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে বিভিন্ন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, ছিনতাইকারী ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মকভাবে কাজ করে চলেছে।
তিনি আরও জানান, সমাজে মাদকের ভয়াল থাবার বিস্তার রোধে মাদকবিরোধী কার্যক্রমে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি র্যাবও সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। গোয়েন্দা নজরদারি এবং নিয়মিত আভিযানিক কার্যক্রমের মাধ্যমে মাদক চোরাকারবারি, চোরাচালানের রুট, মাদকস্পট, মাদকদ্রব্য মজুদকারি ও বাজারজাতকারিদের চিহ্নিতের মাধ্যমে তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে র্যাব বদ্ধপরিকর। এ লক্ষ্যে র্যাব প্রতিদিন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অভিযান পরিচালনা করে থাকে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।