নড়াইলে ২ মাসে শতাধিক বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ
নড়াইলকে বাল্যবিয়ে মুক্ত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে গত দুই মাসে শতাধিক বাল্যবিবাহ বন্ধ হয়েছে। বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে সদর উপজেলা ও লোহাগড়া উপজেলায় সচেতনতামূলক সভা, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ও শিক্ষা উপবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে।
জেলার মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, সদর উপজেলায় গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে ৭৩টি বাল্যবিয়েসহ লোহাগড়া উপজেলায় ফেব্রুয়ারিতে ২১টি বাল্যবিয়ে বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে।
লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেলিম রেজা বলেন, ফেব্রুয়ারিতে জেলা প্রশাসনের এক সভায় জেলা প্রশাসক মোহেলাল মাহমুদ শরীফ আগামী জুনের মধ্যে নড়াইলকে বাল্যবিবাহমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে প্রশাসনে এ বিষয়ে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বাল্যবিয়ে বন্ধের জন্য সচেতনতামূলক সভার উদ্যোগ নিচ্ছে জেলা প্রশাসন। এসব সভায় মসজিদের ইমাম ও নিকাহ রেজিস্ট্রারদের(কাজি)ভূমিকার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে। এছাড়া এবিষয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সম্পৃক্ততাসহ বাল্যবিয়ের আইন মেনে চলার জন্য সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
লোহাগড়ার ইউএনওর কার্যালয় সূত্র জানায়, ফেব্রুয়ারিতে ২১টি বাল্যবিবাহ বন্ধে বিভিন্ন মামলা করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত ১৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদানসহ জরিমানা করেছেন। এর মধ্যে বর ও তার বাবা, ঘটক, কাজিও রয়েছেন। উপজেলা প্রশাসন বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দুই কিশোরীকে শিক্ষা উপবৃত্তি দিয়েছে।
ইউএনও সেলিম রেজা বলেন, এদের মধ্যে থেকে এক কিশোরীর মাকে বিধবা ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েচে। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি দুপুরে লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নে পদ্মবিলা গ্রামের আদম শেখের ছেলে পলাশ শেখের (২০) সঙ্গে একই উপজেলার জয়পুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের এক কিশোরীর বিয়ে ঠিক হয়। ওই কিশোরী স্থানীয় কওমি মাদ্রাসার ছাত্রী। খবর পেয়ে বিয়ের আগের দিন ভ্রাম্যমাণ আদালত গিয়ে বিয়ে বন্ধ করেন। পাশাপাশি মেয়ের বাবা ও ছেলেকে এক মাস করে কারাদণ্ড দেন। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এ ধরনের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে।
লোহাগড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ ফয়জুর আমির বলেন, শিক্ষা ও সচেতনতার অভাবে এবং আইনের প্রয়োগ কম থাকায় বাল্যবিবাহ বন্ধ করা যাচ্ছে না। জেলা প্রশাসনের উদ্যেগের ফলে বিভিন্ন পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টি হচ্ছে। আর এতে বিশেষ সুফল পাওয়া যাবে বলে মনে করেন তিনি।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।