দিনাজপুরের পার্বতীপুর স্টেশনে এসে পৌঁছেছে ভারতীয় জ্বালানি তেলের প্রথম চালান।  আজ শনিবার (১৯ মার্চ) ভোর ৫টার দিকে ৪২ ট্যাংকারে ২২শ টন গ্যাস অয়েল (ডিজেল) নিয়ে ভারত থেকে বিশেষ তেলবাহী (বিটিও) ট্রেনটি পার্বতীপুর স্টেশনে এসে পৌঁছায়।  

গত শুক্রবার দুপুর ১টায় ভারতের শিঙ্গাবাদ সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশের চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার রহনপুর সীমান্ত দিয়ে বিশেষ ট্রেনটি বাংলাদেশে প্রবেশ করে। 

আজ শনিবার বেলা ১টায় পার্বতীপুর রেল হেড ডিপো চত্তরে ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিকভাবে তেলের চালানটি গ্রহণ করেন বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ, জালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ডঃ তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ভারপ্রাপ্ত সচিব মাহমুদ রেজা খান, পেট্রোবাংলার পরিচালক মীর আলি রেজা, পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরফদার মাহমুদুর রহমান, ডিপো ইনর্চাজ শাহজাহান হাওলাদার, পার্বতীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম প্রামানিক ও পার্বতীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুল আলম প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ডঃ তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, নিজেদের উন্নয়নের স্বার্থে প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে আমাদের সম্পর্ক উন্নয়ন খুবই জরুরী। এজন্য আমরা আমাদের বৃহৎ প্রতিবেশী ভারতসহ নেপাল ও ভূটানের সাথে দ্বিপাক্ষিক সর্ম্পক উন্নয়নে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে ভারত আমাদের দেশের উন্নয়নে বিভিন্ন খাতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। রাস্তাঘাট, রেলওয়ে, টেলিকমিউনিকেশনসহ অন্যান্য খাতের উন্নয়নে প্রতিবেশী দেশগুলোর পরস্পরকে সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে।

জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বড় অগ্রাধিকার হলো জ্বালানি খাত। তিনি বিশ্বাস করেন জ্বালানির খাতের উন্নয়ন ছাড়া দেশের সত্যিকার উন্নয়ন সম্ভব না। দেশের চাহিদা অনুযায়ী জ্বালানি সরবরাহ ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত থেকে জ্বালানি তেল আমদানীর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জ্বালানি চাহিদা পুরণের জন্য দিনাজপুরের পার্বতীপুরের মত খুলনাতেও জ্বালানি সংরক্ষণাগার গড়ে তোলা হবে। 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, আগামি তিন বছরের মধ্যে ভারতের শিলিগুড়ি থেকে বিপিসির পার্বতীপুর রেলওয়ে অয়েল হেড ডিপো পর্যন্ত ১৩০ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে।

পেট্রোবাংলার পরিচালক মীর আলি রেজা জানান, জ্বালানি খাতে বাংলাদেশ-ভারত সহযোগিতা সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে ২০১৫ সালের এপ্রিলে ভারতের লুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেড (এনআরএল) ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) মধ্যে ন্যায্যতার ভিত্তিতে ডিজেল পাঠানোর এক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী পরবর্তীতে এনআরএল শিলিগুড়ি থেকে বিপিসির পার্বতীপুরের রেলওয়ে হেডডিপো সংরক্ষণাগার পর্যন্ত ১৩০ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মান করা হবে। আপাতত স্থল  

পথেই তেল আসা অব্যাহত থাকবে। চুক্তির আলোকে শুভেচ্ছা স্মারক হিসেবে ভারত সরকার ২২শ টন জ্বালানি তেলের বর্তমান চালানটি বাংলাদেশে পাঠান।