৬০ শতাংশ বেশি খরচে ভারত থেকে ডিজেল আসছে!
বাংলাদেশ ও ভারত সম্পর্ক মজবুত করতে আরো একধাপ এগোলো। এবার ভারত থেকে রেলপথ ব্যবহার করে ডিজেল আমদানি করছে বাংলাদেশ। তবে এই সম্পর্ক দৃঢ় করার চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। মধ্যপ্রাচ্য বা পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো থেকে যে খরচে ডিজেল পরিবহন করা হয়, তার চেয়ে ৬০ শতাংশ বেশি খরচে ভারত থেকে ডিজেল আনতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) একটি সূত্র জানিয়েছে, আগামীকাল শনিবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি মার্কেটিং টার্মিনাল থেকে আমদানি করা ২২০০ মেট্রিক টন ডিজেল আসবে দেশে। এরই মধ্যে ডিজেলের চালান নিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশের পার্বতীপুরের উদ্দেশে ছেড়ে এসেছে ট্রেনটি।
বিপিসির সূত্রটি আরো জানায়, ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত পেট্রোলিয়াম করপোরেশন এই ডিজেলের প্রতি ব্যারেলের জন্য পরিবহন খরচ, ইন্স্যুরেন্স বাবদ রাখছে সাত মার্কিন ডলার। অথচ কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, চীন, ফিলিপাইন, তুরস্ক, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া বা ব্রুনাই থেকে এই তেল আনতে খরচ পড়ে ৪ দশমিক ৪ মার্কিন ডলার। টেন্ডারের মাধ্যমে ডিজেল আমদানি করলে অনেক সময় আরো কম দাম পড়ে।
বৃহস্পতিবার ( ১৮মার্চ) ভারতের কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়ামমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান এবং দার্জিলিংয়ের সংসদ সদস্য সুরিন্দর সিং আলুওয়ালার উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানের মধ্যে এই ডিজেল পাঠানোর উদ্বোধন করেন।
ধর্মেন্দ্র প্রধান জানান, মোট ৪২টি ওয়াগন নিয়ে ডিজেলভর্তি ট্রেনটি সীমান্ত স্টেশন সিঙ্গাবাদ হয়ে বাংলাদেশের পার্বতীপুরে পৌঁছাবে। ট্রেনটিকে পার্বতীপুরে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ স্বাগত জানাবেন বলেও জানান তিনি।
ডিজেলবাহী এই ট্রেনটি ভারত-বাংলাদেশের মোট ৫১৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেবে। যার মধ্যে ২৫৩ কিলোমিটার ভারতে এবং ২৬৩ কিলোমিটার বাংলাদেশের।
ভারত থেকে বাংলাদেশে এই ডিজেল পাঠানোর ফলে দুই দেশের সম্পর্কের বাঁধন আরো জোরালো হবে বলে মনে করেন ধর্মেন্দ্র প্রধান। তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছিল, তার মধ্যে অন্যতম ছিল এই ডিজেল পাঠানোর বিষয়টি।
দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার পরেই ভারতের কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেয় শিলিগুড়ি টার্মিনালের নুমালিগর রিফাইনারি লিমিটেড থেকে বাংলাদেশের পার্বতীপুর পর্যন্ত পাইপলাইন স্থাপন করা হবে। ওই পাইপলাইনটির দৈর্ঘ্য হবে ১৩৫ কিলোমিটার। যার মধ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পাইপলাইন থাকবে ১৩০ কিলোমিটার আর ভারতের অভ্যন্তরে থাকবে ৫ কিলোমিটার। দুই দেশের মধ্যে এই পাইপলাইন স্থাপন করার কাজ খুব শিগগির শুরু করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। তবে যতদিন না ওই পাইপলাইনের কাজ শুরু হচ্ছে, ততদিন পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ির টার্মিনাল থেকে বাংলাদেশের পার্বতীপুর পর্যন্ত ওয়াগনে করেই ডিজেল পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের সূত্রটি জানিয়েছে, পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল আমদানি করলে ট্রেনে পরিবহনের চেয়ে খরচ কিছুটা কমবে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।