ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স-মাস্টার্স পাশ করা তারেক আজিজ (২৬) চাকুরি না পেয়ে হতাশায় আত্মহত্যা করেছেন। তিনি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার একতারপুর গ্রামের আব্দুল খালেকের একমাত্র ছেলে। বুধবার তারেক আজিজের লাশ একতারপুর গ্রামে দাফন করা হয়। 

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, তারেক আজিজ ২০১৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন বিভাগে প্রথম শ্রেণিতে মাস্টার্স পাশ করে বাড়ি চলে আসেন। বিভিন্ন স্থানে চাকরির জন্য আবেদন করলেও টাকার জন্য তার চাকরি হয়নি। যেখানেই আবেদন করতেন, সেখান থেকে ৮/১০ লাখ টাকার কথা বলা হতো। এ নিয়ে তার বাবা প্রায় বলেতেন, তাহলে পড়ালেখা না করে আমার সঙ্গে মাঠে কাজ করলেই পারতিস। পিতার এমন কথায় হতাশা থেকে মানসিক বিকারগ্রস্থ হয়ে পড়েন তিনি। ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিয়ে হতদরিদ্র পিতার গলগ্রহ হয়ে গ্রামের বাড়িতে এক সময়ের মেধাবী ছাত্র তারেক বেকার জীবন কাটাতেন।

তার বোন যশোর এমএম কলেজের ছাত্রী শারমিন সুলতানা জ্যোতি জানান, ভাইয়া চাকরি না পেয়ে হতাশায় প্রচণ্ড মানসিক যন্ত্রনায় ভুগতেন।

তিনি আরো জানান, গত বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) রাতে তিনি বিষপান করেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে গত মঙ্গলবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার ভোর ভাইয়া মারা যায়। 

তারেকের সহপাঠী টিপু সুলতান জানান, শিক্ষা জীবন শেষ হওয়ার পর থেকে দীর্ঘদিন তিনি সরকারি-বেসরকারি চাকরির জন্য পরীক্ষা দিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু টাকার অভাবে কোনো চাকরিই পাচ্ছিলেন না। একপর্যায়ে তিনি মানসিক ভারসম্য হারিয়ে ফেলেন। এছাড়া বন্ধুদের কাছে প্রায় তিনি হতাশার কথা বলতেন। 

তারেকের রুমমেট জুবায়ের আহমেদ বলেন, মানুষ হিসেবে তারেক খুব বিনয়ী ও ভদ্র ছিলেন কিন্তু কোথাও চাকরি পাচ্ছিলেন না। হতাশা থেকে জীবনের প্রতি তার বিতশ্রদ্ধা জন্মায় এবং সে কারণেই তারেক আত্মহত্যা করেছে। 

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, তারেক আজিজ নামে একটি ছেলে আত্মহত্যা করেছিল। ঢাকার শাহবাগ থানার অনুমতি নিয়ে লাশ দাফন হয়েছে।