প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য হিলারি ও ট্রাম্পের জয়
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রকাশ : ১৬ মার্চ, ২০১৬
প্রিন্টঅঅ-অ+
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য মঙ্গলবার(১৫ মার্চ)গুরুত্বপূর্ণ বাছাইপর্বে ডেমোক্রেটিক দলের হিলারি ক্লিনটন ও রিপাবলিকান দলের ডোনাল্ড ট্রাম্প বড় ধরনের জয় পেয়েছেন। তার দুজনই চারটি করে অঙ্গরাজ্যে জয় পান।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মিজৌরিতে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বার্নি স্যান্ডার্সের সঙ্গে হিলারি এবং টেড ক্রুজের সঙ্গে ট্রাম্প ভোট প্রায় সমান সমান ভাগ করে নিয়েছেন। এদিকে রিপাবলিকান গভর্নর জন কেইসিক তার নিজের অঙ্গরাজ্য ওহাইওতে জয় পেলেও মার্কো রুবিও নিজের অঙ্গরাজ্য ফ্লোরিডায় পরাজিত হয়ে মনোনয়নের লড়াই থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
অধিকাংশ ভাষ্যকারই একমত, মঙ্গলবার বাছাইপর্বের ভোটের পর হিলারি তার মনোনয়ন নিশ্চিত করতে আরও একধাপ এগিয়ে গেলেন। তার ঝুড়িতে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৫৫৯ ডেলিগেট রয়েছে। স্যান্ডার্সের মাত্র ৮০০। মনোনয়ন পাওয়ার জন্য কমপক্ষে ২ হাজার ৩৮২ ডেলিগেটের সমর্থন প্রয়োজন। এখনো ও অনেক প্রাইমারি নির্বাচন বাকি। কিন্তু জনমত জরিপ ও নির্বাচনের গতিধারা দেখে এ কথা বলা যায় যে, স্যান্ডার্সের পক্ষে মনোনয়নের লড়াইয়ে টিকে থাকা কার্যত অসম্ভব।
রিপাবলিকান দলের হিসাবটা কিছুটা জটিল। কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে চমৎকার ফলাফলের জোরে ট্রাম্প এখন পর্যন্ত ৬২১ জন ডেলিগেটের সমর্থন অর্জন করেছেন। এতে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রুজের সমর্থন পেয়েছেন ৩৯৬ জন ডেলিগেটের। ওহাইওতে জয়ের সুবাদে কেইসিক সব মিলিয়ে পেয়েছেন মোট ১৩৮ জন ডেলিগেটের সমর্থন। জুলাইয়ের দলীয় কনভেনশনে মনোনয়ন নিশ্চিত করতে এঁদের কোনো একজনকে কমপক্ষে ১ হাজার ২৩৭ ডেলিগেটের সমর্থন পেতে হবে।
এছাড়া বাছাইপর্বের সবচেয়ে বড় খবর সিনেটর মার্কো রুবিওর পরাজয় এবং প্রতিযোগিতা থেকে তার প্রস্থান বিষয়টি। রুবিওই ছিলেন রিপাবলিকান দলের নেতৃত্ব ও বড় চাঁদাদাতাদের সবচেয়ে প্রিয় মনোনয়নপ্রত্যাশী। তারা আশায় ছিলেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রধান বাধা আসবে রুবিওর কাছ থেকে। কিন্তু নিজ অঙ্গরাজ্যে ব্যাপক ব্যবধানে পরাজয়ের পর মনোনয়ন লড়াই চালিয়ে যাওয়া কোনো যৌক্তিকতা ছিল না। নিজের সিদ্ধান্ত ঘোষণার সময় রুবিও স্বীকার করেন, তিনি যে ‘আশাবাদী বার্তা’ নিয়ে লড়াইয়ে নেমেছিলেন, এ বছর ভোটারদের ক্রোধ ও হতাশার মুখে তা নিয়ে টিকে থাকা অসম্ভব ছিল।
এদিকে টেক্সাসের সিনেটর ক্রুজ এখনো জোরের সঙ্গে বলছেন, তিনি একমাত্র প্রার্থী, যার পক্ষে ট্রাম্পকে পরাস্ত করা সম্ভব। কেইসিকের নাম উল্লেখ না করে তিনি সব রিপাবলিকান সমর্থককে তার প্রার্থিতার পেছনে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আবেদন করেন।
এই নির্বাচনী-প্রক্রিয়া আরও দীর্ঘ সময় ধরে চলবে। পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমের জনবহুল অধিকাংশ অঙ্গরাজ্যে এখনো প্রাইমারি হয়নি। ডেমোক্র্যাটদের জন্য সুখবর, হিলারির জন্য বিজয় নিশ্চিত হওয়া এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা। নিজের বিজয় সম্বন্ধে আস্থাবান হলেও প্রয়োজনীয় ডেলিগেট সংগ্রহ না হওয়া পর্যন্ত স্যান্ডার্স প্রতিযোগিতায় টিকে থাকুন, এটাই চান হিলারি।
হিলারি জানেন, স্যান্ডার্সের কারণে ডেমোক্রেটিক মহলে তরুণদের মধ্যে অভাবিত সাড়া জেগেছে। তিনি (হিলারি) এমন কিছু করতে চান না যার ফলে এই তরুণ ভোটারেরা তাঁর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন।
রিপাবলিকান দলের অবস্থা অবশ্য ভিন্ন। ট্রাম্পকে ঠেকানোর বিস্তর চেষ্টা সত্ত্বেও এই ক্যাসিনো ব্যবসায়ী তাঁর বিজয়যাত্রা অব্যাহত রেখেছেন। দলের নীতিনির্ধারক মহল আশা করছেন, ট্রাম্প-ক্রুজ-কেইসিক—এই ত্রিমুখী লড়াই যদি অব্যাহত থাকে, তা হলে ট্রাম্প এককভাবে সর্বাধিক ডেলিগেট পেলেও প্রয়োজনীয় ১ হাজার ২৩৭ জন ডেলিগেটের সমর্থন অর্জন করতে সক্ষম হবেন না।
দলীয় কনভেনশনে ডেলিগেটদের ভোটে প্রার্থিতা চূড়ান্ত হবে। সেখানে প্রথম ব্যালটে ভোট হওয়ার পর ডেলিগেটরা তাদের প্রতিশ্রুত প্রার্থীর পক্ষে ভোট দিতে আর বাধ্য নন। এ পরিস্থিতিতে দলের নেতৃত্ব পেছন থেকে তাদের প্রভাব খাঁটিয়ে অন্য কোনো প্রার্থীর মনোনয়ন নিশ্চিত করার চেষ্টা করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্পিকার পল রায়ান কিংবা ২০১২ সালের রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী মিট রমনির নামও কেউ কেউ প্রস্তাব করেছেন। তবে এর ফলে যে দলে ভাঙন ধরবে এবং তৃতীয় কোনো প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমে পড়বেন না, তার সম্ভাবনা একদম উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।