গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়িতে প্রান্তিক চাষীদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ইরি-বোরো ক্ষেতের পোকা দমনের পার্চিং পদ্ধতি। রোপণকৃত ইরি-বোরো ক্ষেতে সার দেওয়ার পর থেকেই ঘাসফড়িং, পাতা মোড়ানো পোকা, চুঙ্গি-মাজরা পোকার আক্রমণ ব্যাপকতা দেখা দেয়। এসব পোকার আক্রমণ থেকে ফসল বাঁচাতে কৃষকরা নানান পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন।

ক্ষেতে বিষাক্ত ঔষধ প্রয়োগের পরিবর্তে এখন অনেকাংশে পোকা দমনে সহজ ও পরিবেশ বান্ধব পার্চিং পদ্ধতির ব্যবহার অন্যতম হয়ে উঠেছে। এর পাশাপাশি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ এরই মধ্যে প্রতিবিঘা জমিতে ডেডপার্চিং ও জীবন্ত পার্চিং পদ্ধতির কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।

এ কার্যক্রমে মাঠ পর্যায়ে সন্তোষজনক সাফল্যের লক্ষ্যে উপজেলার প্রত্যেক ইউনিয়নে নিয়োজিত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা (বিএস) কৃষকদের মাঝে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এবারে উপজেলায় গৃহিত মোট লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে প্রায় ১০ হাজার ৫’শ ৫০ হেক্টর জমি এ পদ্ধতির আওতায় আনা হয়েছে।

এতে পরিবেশ বাঁচিয়ে কৃষকরা স্থানীয় পদ্ধতিতে স্বল্প খরচে পোকা, পোকার ডিম বিনষ্ট করছেন। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আজিজুর রহমান জানান, পার্চিং পদ্ধতি এমন একটি পদ্ধতি যা পরিবেশের কোন ক্ষতি করে না। এতে কৃষকদের কোন অতিরিক্ত টাকা-পয়সাও ব্যয় করতে হয় না। প্রতিবিঘা জমিতে বাঁশঝাড় থেকে মাত্র ১০-১২টি কঞ্চি বা বিভিন্ন গাছের ডালপালা অথবা বাঁশের বাতি দিয়ে পোকা নিধনে চিহিৃত পাখিদের বসার মতো জায়গা করে দিলে পাখিরা ইরি-বোরো ক্ষেতের ক্ষতিকর পোকামাকড় অতি সহজেই খেয়ে ফেলে।

ফলে পোকার কবল থেকে ক্ষেত অনেকটা রক্ষা পায়। ক্ষতিকর পোকামাকড় দমনের জন্য পরিবেশ বান্ধব পার্চিং পদ্ধতি খুবই কার্যকর। এ পদ্ধতি ব্যবহার করে ইতোপূর্বেও কৃষকরা ইরি-বোরো উৎপাদন বৃদ্ধি করে ইতিবাচক সাফল্য অর্জন করেছেন।

এবারেও পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহারে কৃষকরা অনেকটা সচেতন হওয়ায় পোকা-মাকড়ের আক্রমন থেকে রক্ষা পাবে এবং সেই সাথে বাম্পার ফলন সম্ভব হবে বলে কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা জানান।